October 6, 2025

স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে লড়াই করে চলেছে ‘রাজকুমারী’ জ্যোতি

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: ‘বাবার মমতা কি বুঝতে না বুঝতেই’ পিতৃহারা হলো টালিগঞ্জের ফুটফুটে সাড়ে তিন বছরের মেয়েটি। বাবার কোলে চেপে ঘুরে বেড়ানোর বয়সে মায়ের হাত ধরে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে জীবনসংগ্রামে নেমে পড়তে হলো তাকে। মা-মেয়ের জন্য দু’বেলা দু’মুঠো খাবার তো জোটাতে হবে! ঐটুকু মেয়ে কী কাজ করবে, কেইবা কাজ দেবে! তবুও তার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।পিতৃহারা শিশুকন্যা ও নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সদ্য স্বামীহারা মধুমিতা দেবী তখন কার্যত দিশেহারা। বিশাল পৃথিবীতে তার যে মা ও মেয়ে ছাড়া আর কেউ নেই। নিজের মেয়েকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার লড়াই শুরু করলেন তিনি। প্রতিবেশীরা অবাক হয়ে মা-মেয়ের বেঁচে থাকার লড়াই দেখতে লাগল। সেই লড়াই অনেকটা রূপকথার গল্পের মত।
মাত্র বছর চারের বয়সেই মডেলিংয়ের কাজ শুরু করে মেয়েটি। একটি বিজ্ঞাপন কোম্পানির পোশাকের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসাবে তাকে দেখা যায়। বিনিময়ে কিছু অর্থ পায়। পরিমাণটা অল্প হলেও সেটাই তার প্রথম আয়, আনন্দটা প্রচুর। এইভাবেই সামান্য আয় মা-মেয়ের জীবনে যেন নতুন করে বেঁচে থাকার আলোকবর্তিকা হয়ে ওঠে। নতুন করে পথ দেখায়। সেটাই শুরু। পরে একাধিক বিজ্ঞাপনে কাজ করার সুযোগ সে পায়।কোনো একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করার সময় সেখানকার সেটে বাচ্চা মেয়েটার দিকে নজর পড়ে অশোকনগরের একটি নৃত্য ও অভিনয় শিক্ষা কেন্দ্রের কর্ণধার রূপম ভট্টাচার্যের। মেয়েকে সেখানে ভর্তি করার মত আর্থিক সামর্থ্য মধুমিতা দেবীর না থাকলেও রূপম বাবু তাকে হতাশ করেননি। পরবর্তী ঘটনা চমকপ্রদ। তবে বছর আটেক আগে চলার পথটা শুরু হয়েছিল হরিদেবপুরের একটি স্টুডিওর মালিক অপু-দীপুর হাত ধরে। সেদিন এবং আজও যদি তারা পাশে না থাকত তাহলে হয়তো কোথাও হারিয়ে যেত প্রতিভাময়ী মেয়েটি। পরিবারের একজন প্রকৃত সদস্যের মত তারা তাদের পাশে দাঁড়ায় এবং তাদের সৌজন্যে টুকটাক বিজ্ঞাপনের কাজ মেয়েটি পায়।
এই মেয়েটি হলো প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী ‘রাজকুমারী’ জ্ঞানজ্যোতি নস্কর, মা মধুমিতা দেবীর আদরের ‘সোনা’। সুটিং সেটে সবাই তাকে জ্যোতি বলেই ডাকে।

Loading