সোমালিয়া ওয়েব নিউজ : মঙ্গলবার বসিরহাট মহকুমা আদালতের বাইরে ‘অন্য শাহজাহান’কে অন্য রূপে দেখতে পেলে সকলে। গ্রেপ্তারির পর ধীরে ধীরে দম্ভ উধাও হয়েছে। মঙ্গলবার বসিরহাট আদালতে তোলা হয় সন্দেশখালির ‘বাঘ’ শাহজাহান শেখকে (Shahajahan Sheikh)। সেখানেই তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর শেখ শাহজাহানকে বসিরহাট মহাকুমা আদালত থেকে যখন আবার প্রিজ়ন ভ্যানে তোলা হচ্ছে, কয়েক মিটার দূর থেকে ‘আব্বু’ ডাক শুনে মুখ ফেরান তিনি। মেয়ের দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে ‘হ্যাঁ’ বা ‘ঠিক আছি’ বুঝিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন শাহজাহান। গাড়ির একেবারে জানলার পাশে গিয়ে তত ক্ষণে দাঁড়িয়েছেন শাহাজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি। তদন্তকারীদের তলবে যিনি ইতিমধ্যে একাধিক বার হাজিরা দিয়েছেন। স্ত্রীকে দেখে জানলার দিকে ফিরলেন। আকাশি রঙের জামা এবং ট্রাউজ়ার্স পরিহিত থমথমে মুখে স্ত্রীকে ধীরে ধীরে বললেন, ‘‘নিজের খেয়াল রাখবে।’’প্রিজ়ন ভ্যানের জানলার কাছে তখন শাহজাহানের স্ত্রী-কন্যা সহ পরিবারের অন্যরাও দাঁড়িয়েছেন। সবাই শাহজাহানকে বলছেন, শরীরের যত্ন নিতে। এক জন বললেন, ‘‘সময় মতো ওষুধ খাবে।’’ স্ত্রী আঙুল ছুঁয়েছেন ভ্যানের জানলার রেলিংয়ের ফাঁক দিয়ে। স্ত্রীর কান্না দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না শাহজাহান। ‘আল্লার কাছে দোয়া কোরো’ বলে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। লুকিয়ে চোখ মুছলেন শাহজাহান। প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তারির একদম শুরুর দিকে অন্যরূপে ধরা দিয়েছিলেন শাহজাহান। প্রথম যেদিন তাঁকে আদালতে তোলা হয়েছিল সেদিন কার্যত ফিল্মি কায়দায় আঙুল নাড়তে নাড়তে এজলাসে ঢুকেছিলেন তিনি। কিন্তু এদিনের ছবি একেবারে আলাদা। শাহজাহানের চেহারাতেই স্পষ্ট যে, তাঁর মনোবল ভেঙে গিয়েছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে শাহজাহানের ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল।উল্লেখ্য, শাহজাহান ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশ শিবির খুলে তখন যে সব অভিযোগ গ্রহণ করেছিল, তা খতিয়ে দেখে প্রাথমিক ভাবে ৮০টিরও বেশি মামলা দায়ের করার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই। এর বাইরেও সিবিআইকে ই-মেল আইডি ও অ্যাপ খুলে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দাদের কাছ থেকে সরাসরি আরও অভিযোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সেগুলিও নেওয়া শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে মামলার সংখ্যা শতাধিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তদন্তকারীদের দাবি। তদন্তকারী আধিকারিকদের কথায়, ৫ জানুয়ারি ইডির অফিসার ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপর হামলার ঘটনার পরে ফেরার হয়ে গিয়েছিল সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শাহজাহান। আর তখনই সন্দেশখালির বাসিন্দারা শাহজাহান ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে জোর করে জমি দখল, মারধর, খুন, খুনের চেষ্টা ও ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করতে শুরু করেন। বিভিন্ন গ্রামে রীতিমতো শিবির খুলে বসিরহাট পুলিশ জেলার তরফে ওই অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছিল।
More Stories
মিরিকের বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে সিপিআই(এম) নেতৃত্ব
উত্তরবঙ্গের বন্যা বিপর্যয়ে ত্রাণে বিজেপি, নীরব তৃণমূল! মুখ্যমন্ত্রীর উৎসবের মাঝেই রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য্যের উত্তরবঙ্গ সফর
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন