বিয়ের রাত। মাস্টারদা এসেছেন বিয়ে করতে। বিয়ের মন্ত্র পড়া হবে এবার। হঠাৎ পাশ থেকে একজন মাস্টারদার হাতে গুঁজে দিল একটা চিরকুট। সেই চিরকুটটা পড়ে চিন্তিত ও গম্ভীর হয়ে গেলেন মাস্টারদা। গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ এসেছে কলকাতার দলের উচ্চ মহল থেকে । পরে ফুলশয্যার রাতে নির্জন কক্ষে সহধর্মিণী পুষ্পকে বললেন, “তোমার কাছে আমার অপরাধের সীমা নেই। তুমি আমার অগ্নিসক্ষী করা স্ত্রী ।জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তুমিই আমার স্ত্রী থাকবে।কিন্তু দলের গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমার ডাক এসেছে, আজই তোমার কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে।” অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় দিয়েছিলেন নববিবাহিতা স্ত্রী পুষ্প । শুধু বলেছিলেন, “মাঝে মাঝে তোমার চিঠি পাবো তো?”
কথা রেখেছিলেন মাস্টারদা । চিঠি আসতো পুষ্পর কাছে খুব গোপনে। সে চিঠি শুরু হত ‘স্নেহের পুষ্প ‘ দিয়ে, আর শেষ হত ‘তোমারই সূর্য ‘ দিয়ে ।
আর দেখা হয়নি স্বামী স্ত্রীর ? হয়েছিল সেদিন , যেদিন পুষ্প তখন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুপথ যাত্রী। আর সূর্য সেন জেলে বন্দী । প্যারোলে কয়েক ঘণ্টার জন্য ছাড়া পেয়ে স্নেহের পুষ্পকে দেখতে এলেন । কিন্তু তার আগেই জীবনদীপ নিভে গেছে পুষ্পর।
স্বামীর কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা পুষ্প দত্ত এ জীবনে আর এ বিপ্লবী নেতার দেহ-মনের সান্নিধ্যে যেতে পারেন নি।
মাস্টারদা সূর্য সেনের প্রতি রইল শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
সূত্র : জেলখানার চিঠি।।
More Stories
১৩ হাজার ডলারের বিনিময়ে কেনা এক টুকরো বিরানভূমি, যা পরিণত হলো প্রকৃতির স্বর্গে
কেন ব্যবহার করা হয় “ঘট” হিন্দু পূজায়?
মা দুর্গার মুখে উর্ণনাভ: মহামায়ার চিহ্ন