সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: ভারতে “এক দেশ, এক নির্বাচন” ধারণার মূল লক্ষ্য হলো লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন একসঙ্গে পরিচালনা করা। এটি বারবার নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমে ধারাবাহিকতা আনবে।
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছেন, এক দেশ এক নির্বাচন একটি জাতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন দিল্লিতে আজ সাংবাদিকদের তিনি বলেন , এটি কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়। এটি কার্যকর হলে সামগ্রিকভাবে গোটা দেশ উপকৃত হবে।
লোকসভায় আজ ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত বিল উত্থাপনের আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন , মানুষের কল্যাণের জন্যই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই বিলের বিরোধিতা করায় তিনি বিরোধীদের সমালোচনা করেন । তিনি বলেন , কংগ্রেস সংবিধানের ৩৫৬ নম্বর ধারার অবমাননা করেছে, যার ফলে সংসদ এবং বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচন পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
এর আগে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল সংবিধানের ১২৯ তম সংশোধনীর জন্য The Constitution Bill – এর The Union Territories Laws সংশোধনী বিল লোকসভায় পেশ করেন। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, DMK, শিবসেনা UBT, CPIM সহ বিরোধী দলগুলি এই বিল দুটির তীব্র বিরোধিতা করে। তাদের অভিযোগ এর ফলে সংবিধানের মূল কাঠামোতে আঘাত হানা হবে। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন এই বিল কার্যকর হলে তা হবে গণতন্ত্রের পরিপন্থী । বিলটি আরও বিবেচনার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাথানোর প্রস্তাব ও দেওয়া হয়। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছেন, এক দেশ এক নির্বাচন জাতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন দিল্লিতে আজ সাংবাদিকদের তিনি বলেন , এটি কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়। এটি কার্যকর হলে সামগ্রিকভাবে গোটা দেশ উপকৃত হবে। নতুন ভারত, বিকশিত ভারত ২০৪৭ – এর দিকে এগোচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
বর্তমানে সারা বছর বিভিন্ন স্তরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর ফলে বিপুল অর্থব্যয় হয় এবং মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট কার্যকর থাকায় উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা সৃষ্টি হয়।
সমন্বিত নির্বাচন এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এতে খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে এবং সাশ্রয় হওয়া অর্থ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ইত্যাদির মতো খাতে ব্যয় করা সম্ভব।
এই ধারণাটি প্রথম ভারতীয় আইন কমিশনের ১৭০তম রিপোর্টে (১৯৯৯) উত্থাপিত হয়। ২০১৮ সালে ২১তম আইন কমিশন এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ করে।
স্বাধীনতার প্রথম দুই দশকে (১৯৫১-১৯৬৭) সমন্বিত নির্বাচন পদ্ধতি কার্যকর ছিল। সেই সময় এটি কার্যকরী প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে অকাল নির্বাচনের কারণে এই ধারাবাহিকতা ভেঙে যায়।
নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর মতো নেতারা এর পক্ষে মত দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী বারবার এর আর্থিক ও প্রশাসনিক সুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। কমিটি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের মতামত নিয়ে একটি চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৩৫,০০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। ২০১৯ সালে এই ব্যয় আরও বৃদ্ধি পায়। প্রতিটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের খরচ ভিন্ন ভিন্ন, যা সারা বছরে অনেক অর্থ ব্যয়ের কারণ হয়।
সমন্বিত নির্বাচন হলে এই বিপুল অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব। সাশ্রয়কৃত অর্থ শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামোর মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যাবে।
এই ধারণার মাধ্যমে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া সাশ্রয়ী, সময়োচিত এবং উন্নয়নমুখী হতে পারে। গণতান্ত্রিক কাঠামোও আরও শক্তিশালী হবে।
লোকসভায় আজকে ONOE বিল পেশ হয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ইচ্ছা অনুযায়ী এটা আজকে JPC তে পাঠানো হয়েছে।। সেখানে আরো সব স্তরে আলোচনা হবে এটা নিয়ে।
More Stories
আজ জাতীয় কৃষক দিবস
আজ ৭১ হাজারেরও বেশি প্রাপকের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র
এন আই এ, চারটি রাজ্যে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে