সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: ২২শে ফেব্রুয়ারি সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছিলেন। ওই দিন এই দুই রাজ্যে বেশকিছু কর্মসূচির পাশাপাশি জনসভাও করেছিলেন। এমনকি আসামে জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি জানিয়েছিলেন ৭ মার্চ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে চলেছে। তার আগে তিনি বেশ কয়েকবার আসামে আসবেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এবার পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আসাম সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই তখন সবাই ধরে নিয়েছিলেন ৭ মার্চ দেশের নির্বাচন কমিশন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবে। কারণ ভারতে নির্বাচন কমিশন স্বশাসিত সংবিধান স্বীকৃত সংস্থা হলেও বারবারই বিরোধীদল অভিযোগ তোলে, কেন্দ্রীয় সরকারই নাকি দেশের নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দাবিতে অনেকেই অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি। তাঁদের ধারণা হয়েছিল নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করেই হয়তো সাত মার্চ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার কথা স্থির করেছে। এই নিয়ে বিভিন্ন বিজেপি-বিরোধী দলগুলি সমালোচনা করতেও ছাড়েনি। দেশের একটি স্বশাসিত সংস্থার গোপন তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিভাবে গেল তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার সেই জল্পনা ও বিতর্কে জল ঢেলে দিল দেশের নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রীর সেদিনের ঘোষণাকে একেবারে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এদিনই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিল। অর্থাৎ নির্বাচনের দিন ঘোষণা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য একেবারে ভুল প্রমাণিত হয়ে গেল। তিনি নিজেও একেবারে বোকা বনে গেলেন!!!
যদিও বিশষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী অনেক জেনে-বুঝেই সেদিন ৭ মার্চের কথা বলেছিলেন। এর দুটি কারণ থাকতে পারে। এক, প্রধানমন্ত্রী এইভাবে ভুল তারিখ ঘোষণা করে এটা বোঝালেন যে দেশের নির্বাচন কমিশন সত্যিই একটা স্ব-শাসিত সংস্থা। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির সে ব্যাপারে কোন তথ্য জানার কথা নয়। নির্বাচন কমিশন ৭ মার্চের আগেই দিন ঘোষণা করে দিয়ে সেই বক্তব্যকেই মান্যতা দিল। অর্থাৎ বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অমিত শাহ যে নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করেন না এটাই তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন। দুই, বিশেষজ্ঞদের অন্য একটি অংশের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর নিজেও জানতেন যে ফেব্রুয়ারির শেষে এই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাবে। কিন্তু বিরোধী দলগুলিকে গুছিয়ে ওঠার সুযোগ না দিতেই তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সেই তারিখ অনেক পিছিয়ে ঘোষণা করেছিলেন। বিরোধী দলগুলি হয়তো ভেবেছিল, প্রধানমন্ত্রী যখন বলছেন তাহলে নিশ্চয়ই ৭ মার্চই দিনক্ষণ ঘোষণা হবে। সেই মতো তারা তাদের কর্মসূচি প্রস্তুত করেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে নির্বাচন কমিশন তার বহু আগেই দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেওয়ায় অনেকটাই সমস্যায় পড়বে বিরোধী দলগুলি। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন। নির্বাচন কমিশন যে স্বশাসিত সংস্থা একদিকে যেমন তা বোঝালেন, অন্যদিকে বিরোধী দলগুলোকে বোকা বানালেন।
তিনি নিজে এতটুকু বোকা বনেননি।
More Stories
নীতিশ সরকারের নতুন দান — ২৫ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্কে পৌঁছল ১০ হাজার টাকা
বিজয়া দশমী: অধর্মের পরাজয় ও ধর্মের জয় উদযাপন
মহা অষ্টমী : দেবী আরাধনার সর্বোচ্চ শিখর