সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ ১৯৪৬ সালের আগস্ট মাসে কলকাতায় সংঘটিত ভয়াবহ দাঙ্গা ইতিহাসে “গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস” নামে পরিচিত। ১৬ আগস্ট দিনটি ‘ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে’ হিসেবে মুসলিম লীগ ঘোষণা করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীন ভারতের জন্য একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র (পাকিস্তান) গঠনের দাবি জোরদার করা। কিন্তু সেই দিন কলকাতার রাস্তায় নেমে আসে অমানবিক সহিংসতা, যা পরিণত হয় ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়।
চারদিনব্যাপী এই দাঙ্গায় শহরের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ চলে। নিরপেক্ষ সূত্র অনুযায়ী, প্রায় ৪,০০০ মানুষ নিহত এবং এক লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হন। হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই এতে ভুক্তভোগী হন।
কলকাতার মতো বহুধর্মীয়, বহুজাতিক শহর হঠাৎই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রশাসন প্রথমদিকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনী নামানো হলে সহিংসতা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
“গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস” ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে ভারতীয় রাজনীতির গভীর বিভাজনের প্রতিফলন। এই দাঙ্গাই পরে নোয়াখালী, বিহার, পাঞ্জাবসহ আরও বহু জায়গায় দাঙ্গার আগুন ছড়িয়ে দেয়। শেষপর্যন্ত এর ফলেই ১৯৪৭ সালে দেশভাগ এক প্রকার অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে।
ইতিহাসবিদদের মতে, এই হত্যাযজ্ঞ শুধু রাজনৈতিক কৌশলের ফলই নয়, বরং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও বিভেদেরও চরম প্রকাশ। আজও এই ঘটনা মানবসভ্যতার কাছে এক শোকাবহ শিক্ষা— ধর্মীয় বিভাজন ও ঘৃণা কখনোই শান্তি ও স্বাধীনতার পথ তৈরি করতে পারে না।

More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক