বিধাননগর পুলিশের দুর্দান্ত সাফল্য — দেশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জালিয়াত গ্রেফতার কেরালা থেকে

সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ ‘ডন কা ইন্তেজার তো গ্যারা মুলক কি পুলিস কর রহি হ্যায়… লেকিন ডন কো পকড়না মুশকিল হি নহি, নামুমকিন হ্যায়!’ — সিনেমার ডন যদি ১১ দেশে চর্চিত হন, বাস্তবে ভারতের ১৩ রাজ্যের পুলিশ বছরের পর বছর যার পেছনে হন্যে, তিনি হলেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা অজয় কে. ওরফে কুরাপতি অজয়। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা এই ধুরন্ধর জালিয়াতের জাল শেষ পর্যন্ত ছিঁড়ল বিধাননগর পুলিশের হাতে।

অজয়ের নামে সারা দেশে রুজু রয়েছে কম করেও দু’ডজন এফআইআর। তাঁর পেছনে একত্র হয়েছিল দেশের তেরোটি রাজ্যের পুলিশ। তৈরি হয়েছিল বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ — শুধুমাত্র ‘অপারেশন অজয়’ সফল করতে।

তদন্তে জানা যায়, হোটেল বা গেস্টহাউসে অবস্থানকালে অজয় সহজেই বন্ধুত্ব পাতাতেন সহযাত্রী বা অতিথিদের সঙ্গে। তারপর সুযোগ বুঝে তাঁদের ফোন, ওয়ালেট, ল্যাপটপ পর্যন্ত চুরি করে মিলিয়ে যেতেন গা ঢাকা দিয়ে। চুরি করা কার্ড ব্যবহার করে কখনও সোনা কিনেছেন, কখনও দামী ফোন। সব মিলিয়ে জালিয়াতির পরিমাণ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।

বিনয় কুমার নামে এক ব্যক্তির অভিযোগ থেকেই শুরু হয় অভিযান। অভিযোগের সূত্র ধরে বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ মাসের পর মাস ধরে ডিজিটাল ট্র্যাকিং, আন্তঃরাজ্য সমন্বয়, এবং নথিপত্র যাচাই করে অবশেষে গত রবিবার কেরালায় গ্রেফতার করে অজয়কে।

তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক সিম কার্ড, আধার কার্ড, ডিজিটাল ডিভাইস, আইফোন, এমনকি অন্যের পরিচয়ে ব্যবহৃত নথিপত্রও। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চুরি করা টাকায় তিনি ১৫টি আইফোন কিনেছিলেন এবং ৪০টিরও বেশি সিম কার্ড ব্যবহার করতেন।

প্রতিটি অপরাধের পর ছদ্মবেশ, ফোন, ও সিম বদলে ফেলতেন অজয়। কখনও কখনও চুরি করা জিনিস ‘কুরিয়ার করে ফেরত’ পাঠাতেন মালিকদের কাছে — যেন আত্মবিশ্বাসের চূড়ান্ত প্রকাশ! তবুও বিধাননগর পুলিশের ধৈর্য, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং আন্তঃরাজ্য সহযোগিতার জোরে শেষ পর্যন্ত সেই ‘অজেয় অজয়’কেও ধরা গেল।

দেশের বহু রাজ্যের পুলিশ যেখানে ব্যর্থ, সেখানে বাংলা পুলিশের এক নিখুঁত অভিযান প্রমাণ করল — “ডন কো পকড়না মুশকিল হি নহি, নামুমকিন ভি নহি।”