সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: বর্ধমান শহরের সর্বমঙ্গলা এলাকায় তখন বেশিরভাগ ছিল জলাজমি ও ধানক্ষেত। এলাকায় অনেক পুকুর ঘাট ছিল৷ ওই সব পুকুরে মাছ, গুগলি ও কাঁকড়া ধরা হত৷ হঠাৎ একদিন মাছ ধরতে গিয়ে এক ব্যক্তির জালে শিলার মতো পাথর উঠে আসে৷ পাথরটির উপর চলত গুগলি ও শামুক থেঁতো করার কাজ ৷ এদিকে গুগলি ও শামুকের সঙ্গে ওই শিলাকেও আগুনে পোড়ানো হতে থাকে ৷ কিন্তু, আগুনে ওই শিলার কোনও ক্ষতি হচ্ছিল না। আর এরইমধ্যে একদিন দেবী সর্বমঙ্গলা স্বপ্নে দেখা দেন বর্ধমানের তৎকালীন রাজাকে। রাজা জানতে পারেন রাজবাড়ির পাশে যে চুনের ভাটা আছে, সেখানে শিলা রূপে তিনি পড়ে আছেন। মূর্তি উদ্ধার করতে গেলে রাজা জানতে পারেন পুজো করার জন্য ওই শিলামূর্তি নিয়ে গিয়েছেন তিন ব্রাহ্মণ। এর পর রাজা ওই তিন ব্রাহ্মণের কাছে স্বপ্নের কথা জানিয়ে মূর্তি আনতে যান ৷ কিন্তু, তাঁরা সেই মূর্তি দিতে অস্বীকার করেন ৷ যদিও পরে ব্রাহ্মণদের রাজি করাতে পেরেছিলেন তৎকালীন রাজা৷ এরপরই তৎকালীন রাজা শিলামূর্তিটিকে নিয়ে এসে সর্বমঙ্গলা নামে পুজো শুরু করেন। জানা যায় বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচাঁদ মহতাব ১৭০২ খ্রিস্টাব্দে বর্ধমানে সর্বমঙ্গলা মন্দিরটি নির্মাণ করান। প্রায় তিনশো বছর আগে রাজার তৈরি ওই মন্দিরে শুরু হয় সর্ব মঙ্গলার পুজো , যা আজও চলে আসছে। রাজার আমলের নিয়ম অনুযায়ী এখনও হয় দুর্গা পুজোর আয়োজন। তবে বেশ কয়েকটি রীতি বর্তমানে আর মানা হয় না। যেমন এখন আর কামানের শব্দে শুরু হয় না অষ্টমীর পুজো।
সর্বমঙ্গলা অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী মহিষমর্দিনী। রাজ আমল থেকেই প্রতিপদে ঘট স্থাপনের মধ্যে দিয়ে এখানে পুজোর সূচনা হয়। বর্ধমান শহরের কৃষ্ণসায়র থেকে ঘটে জল ভরে আনা হয় মন্দিরে। ঘট স্থাপন করা হয় মন্দিরে। শুরু হয় পুজো। নবমী পর্যন্ত চলে বিশেষ পুজোপাঠ৷ নবমীতে হয় কুমারী পুজো। আগে ছাগ, মোহিষ বলি হত তবে এখন চালকুমড়ো, আখ এসবই বলি হয়। সবমিলিয়ে দীর্ঘ সাড়ে ৩০০ বছর ধরে বর্ধমানের চলে আসছে দেবী সর্বমঙ্গলার পুজো।
More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক