সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: সিভিক ভলান্টিয়ারদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজে কেন লাগানো হচ্ছে, এবার এমন প্রশ্ন তোলা হল বিরোধী শিবির থেকে। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ আছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কাজে লাগানো যাবে না। এদিকে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ মেনে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যও সম্প্রতি আদালতে হলফনামায় জানিয়েছেন, সিভিক ভলান্টিয়াররা কী কী কাজ করতে পারবেন, আর কী কী করতে পারবেন না।
এই প্রসঙ্গেই বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা শনিবার অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে জেলায় জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের প্রথম দিন থেকেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগাচ্ছে প্রশাসন। মুর্শিদাবাদের রানিনগরে মনোনয়ন নিয়ে গোলমালের সময় সিভিক ভলান্টিয়াররাই লাঠি চার্জ করে। এরপর মুর্শিদাবাদ-সহ একাধিক জেলায় মনোনয়ন ঘিরে গোলমালের সময় সিভিক ভলান্টিয়ারদের সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। এমনকী অনেক জায়গায় তাঁদের লাঠি হাতে তেড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। একইসঙ্গে বিরোধীদের তরফ থেকে এ অভিযোগও করা হয় যে , রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনেও সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভোটের কাজে না লাগানোর কথাই আছে।তবে সিভিকদের নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন শুভেন্দু। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তর সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুলিশকর্মী হিসেবে দেখানোর রণকৌশল নিয়েছে। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকের পর শনিবার শুভেন্দু সকালে টুইট করে জানান, ‘সূত্র মারফত খবর পাচ্ছি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর সিভিক ভলান্টিয়ারদের এমন পোশাক দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে যাতে তাঁদের দেখে পুলিশকর্মীই মনে হয়। বিভিন্ন স্পর্শকাতর জেলায় এক জেলা থেকে অন্যত্র সিভিক ভলান্টিয়ারদের পাঠানো হচ্ছে।‘ জলপাইগুড়ি, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও বীরভূম জেলায় এমনটা হচ্ছে বলে দাবি শুভেন্দুর। এতে সংশ্লিষ্ট জেলায় কেউ সিভিক ভলান্টিয়ারদের চিহ্নিত করবেন না ভেবেই এই পদক্ষেপ। তৃণমূল কংগ্রেস যে জেলাগুলিতে মাটি হারাচ্ছে সেখানে বিরোধীদের উপর অত্যাচার করতে এবং বুথে প্রয়োজনীয় পুলিশকর্মী না থাকার বিষয়টিকে চাপা দিতেই এই কৌশল। এরই পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী এও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, ‘আমরা হোমওয়ার্ক করে রেখেছি। সিভিক ভলান্টিয়ারদের পরিচয়, কে কোথায় কর্মরত, সব তথ্যের ডেটাবেস তৈরি।’ একইসঙ্গে এও জানান, কোনও অনিয়ম দেখা দিলে তা কলকাতা হাইকোর্টকে জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে শুভেন্দুর।এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা জানান, ‘সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভোটের কাজে কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজে লাগিয়ে রাজ্য সরকার আদালত অবমাননা করেছে। রানিনগরে তাঁরা লাঠি চার্জ করেছেন। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।‘ একইসঙ্গে রাহুল সিনহা এও জানান, ‘আদালতের পরিষ্কার নির্দেশ, ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং আরও কিছু পরিষেবা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলানো কিংবা ভোটের কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না।‘এই প্রসঙ্গে প্রায় একই সুর সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথাতেও। তিনি জানান, ‘পুলিশে নিয়োগ বহুদিন ধরে বন্ধ। থানাগুলি এখন সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়েই চলে। এখন দেখছি, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বেও তাঁদের ব্যবহার করা হচ্ছে।‘ একই অভিযোগ কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীরও। কৌস্তভ জানান, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন।
এদিকে কংগ্রেস এবং বিজেপি মনোনয়নের সময় এবং পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে আলাদা করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার ফের সেই মামলার শুনানি। কলকাতা হাইকোর্ট সেদিন রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে রিপোর্ট দিতে বলেছে।
More Stories
মিরিকের বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে সিপিআই(এম) নেতৃত্ব
উত্তরবঙ্গের বন্যা বিপর্যয়ে ত্রাণে বিজেপি, নীরব তৃণমূল! মুখ্যমন্ত্রীর উৎসবের মাঝেই রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য্যের উত্তরবঙ্গ সফর
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন