October 5, 2025

কংগ্রেস-আব্বাস সিদ্দিকী তো রয়েছেই তার ওপর বিজেপি-তৃণমূলও শুরু করেছে টানাটানি; বামকর্মীদের অবস্থা এখন ‘আমি কোন পথে যে চলি’

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: ‘আমি কোন পথে যে চলি/ কোন কথা যে বলি’ বাংলা গানের এই জনপ্রিয় লাইনটির মতোই এখন অবস্থা এ রাজ্যের বামপন্থীদের। যেভাবে তাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন দলের ধরে টানাটানি শুরু হয়েছে তাতে এখন তাদের সসেমিরা অবস্থা। এমনিতেই কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে জোটের জন্য কম সমালোচনা করতে হচ্ছে না। তার উপর কখনও বিজেপি, আবার কখনও তৃণমূল বাম কর্মীদেরকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আহ্বান জানাচ্ছে। এর ফলে অনেক বামপন্থী কর্মীই এবারের নির্বাচনে কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। তাঁদের সিদ্ধান্তহীনতা যেন চোরাগোলির মধ্যে পথ হারিয়েছে। তাই এখন কোনো বামপন্থী কর্মী যদি ওই গানের রেশ ধরে গিয়ে ওঠেন ‘সেই গলিতে ঢুকতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে দেখি/ বন্ধু সেজে বিপদ আমার দাঁড়িয়ে আছে একি’ তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। উল্লেখ্য, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের জায়গা ফিরে পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বামপন্থীরা। কিন্তু তাঁরা বুঝতে পেরেছেন নিজেদের একার পক্ষে কখনোই তা সম্ভব নয়। আর তাই তাঁরা চরম অনীহা সত্ত্বেও দুই বিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে বাধ্য হয়েছেন। যে কংগ্রেস দলের সরকার থেকে সমর্থন তুলে বামেদের পতনের পথ শুরু হয়েছিল এখন তাদের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছে। অন্যদিকে আব্বাস সিদ্দিকীর মতো নতুন আনকোরা মানুষের হাতে গড়া দলের সঙ্গে হাত মেলাতেও বাধ্য হয়েছে। কারণ বামেরা নিজেরাও জানে একা লড়তে গেলে তাদের অবস্থা কি হতে পারে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে এভাবে দুই বিরুদ্ধ শক্তির সঙ্গে জোট করে বামেরা নিজেদের অস্তিত্বই হয়তো চিরতরের মত হারিয়ে ফেলছে। আদর্শও যে একেবারেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে অনেকেই তা বুঝতে পারছেন। বিজেপি এমনকি তৃণমূলও তাদেরকে ধরে টানাটানি শুরু করেছে। বিভিন্ন জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী সিপিএম কর্মীদেরকে এবারও বিজেপি প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারীর যুক্তি, যদি তৃণমূলের হাত থেকে মুক্তি পেতে হয় তাহলে আগে তৃণমূলকে হারাতে হবে। আর এ কথা অনেক সিপিএম কর্মীও বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন। অন‍্যদিকে শুক্রবার বারাসাতে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও বামেদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, আমি বামপন্থীদের বলছি একটু কোমর বেঁধে লাগুন। একটু নড়াচড়া করুন। বামেদেরকে এই পরামর্শ দেওয়া দেখে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। তাদের বক্তব্য, বামেদেরকে সরাতেই তৃণমূলের জন্ম। অথচ এখন বামেদের ভোট কি করে বাড়ে তার জন্য তৃণমূল নেতাদের ঘুম হচ্ছে না।  এটাই বলে দিচ্ছে বাংলায় এবার বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। তাই এবারের নির্বাচনে বামপন্থী কর্মীরা কি সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা নিজেরাই বুঝতে পারছেন না। বামকর্মীদের  এখন যেন ওই গানের কথার মতই অবস্থা। ‘এখন আমি লেঙচে মরি/ ওরে বাবা লেঙচে মরি/ পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা ধরি।’ হয়তো আবার কোন কোন বাম কর্মী সেদিনের কংগ্রেস সরকার থেকে সমর্থন তোলাকে দোষারোপ করে বলতেই পারেন, ‘সবই কপাল দোষে /করেছি কি ভুল/ নিজেই নিজের দু’কান মলি।’ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই দোদুল্যমান বাম কর্মীদের হাতেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নবান্ন পৌঁছে যাওয়ার চাবিকাঠি।

Loading