পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এখন এক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অদ্ভুত আতঙ্ক । আতঙ্ক হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে। মানুষ এখন দ্বিধাগ্রস্ত। বিশেষভাবে সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয় যারা সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করছেন তারাও কিন্তু অনেকেই দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছেন বা বলা যায় আতঙ্কগ্রস্ত। কি এই আতঙ্ক? আতঙ্কটা হচ্ছে, যে কোন একটা রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে। সামনে ২০২১ বিধানসভার নির্বাচন। ভোট কোনও না কোনও দলকে দিতেই হবে এবং কোন না কোন দল এই নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করবে। এখন একটু ভেবে দেখা যাক, আতঙ্কটা কোথায়? অনেকেই মনে করছেন, যদি সিপিএম-কংগ্রেস জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে পশ্চিমবঙ্গে না আবার সেই লাল সন্ত্রাস দেখতে হয়। তাহলে সাধারণ মানুষ অনেকটাই বিপাকে পড়বে। বিশেষভাবে যারা মধ্যবিত্ত সমাজের মানুষ। যাদের সামান্য জমি রয়েছে তাদের নিজেদের চাষ করার সামর্থ্য নেই। তারা ভাগে জমিতে চাষ করাবে। কিন্তু তাদের আতঙ্ক যদি সিপিএম-কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে তাদের জমিগুলো বর্গাদার দখল করে নেবে। ফসল ঠিকঠাক পাবে না। যেটা বাম জমানায় সাধারণভাবে দেখা গেছে। এছাড়াও রয়েছে সাধারণ মানুষ ঠিকঠাকভাবে ভোটটা তাদের দিতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম দখল। এটা বাম জমানায় প্রবলভাবে দেখা গিয়েছিল। এবার আসা যাক যদি তৃণমূল ক্ষমতায় আসে। হিন্দুরা ভাবছে যে তারা আক্রান্ত হতে পারে। আবার ঠিক একই রকমভাবে বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে মুসলিমরা আক্রান্ত হতে পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই আতঙ্ক থাকবে? কোন রাজনৈতিক দলই বলতে পারছে না যে তারা ক্ষমতায় এলে মানুষ ভালভাবে থাকবে। ন্যায় বিচার পাবে। সেই জায়গাটা কিন্তু এখনও তৈরি হচ্ছে না। এখনও রাজনৈতিক দলগুলোর নিচুতলার কর্মীদের বক্তব্য, একবার ক্ষমতায় আসি, দেখে নেব। কিন্তু ওপরতলার নেতারা, তারা একে অপরের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে চলেছেন। নিচুতলার কর্মীরা নিজেদের মধ্যে কেন সদ্ভাব বজায় রাখতে পারবে না? বিভিন্নভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে ২০২১ সালের ভোট নিয়ে। যেখানে প্রার্থী পদ নিয়ে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন উঠে আসছে। কোথাও বলা হচ্ছে যে প্রার্থী পদে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। হিন্দুদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের কথা শোনা যাবে কেন? যেটা তৃণমূলের ক্ষেত্রে হয়েছে। তবে পরিস্থিতি যে সত্যিই খারাপের দিকে গিয়েছে এটা বাস্তব সত্য। পশ্চিমবঙ্গের বুকে সাম্প্রদায়িকতা একটা মাথাচাড়া দিয়েছে এটা সকলেই স্বীকার করে নিচ্ছেন। ভোট ভাগাভাগি হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে। যে কারণে অনেকেই মনে করছেন হিন্দু মুসলিম ভোট ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছে। তার জন্য যেকোন রাজনৈতিক দলই দায়ী থাকুক না কেন। এই যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের কর্তব্য প্রত্যেকের এলাকায় নিজেদের মতো করে দল গঠন করে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। সেটা একমাত্র সাধারণ মানুষই পারে। শিক্ষিত মানুষই পারে সাধারন মানুষকে বোঝাতে। বোঝাতে হবে রাজনৈতিক স্বার্থে সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দেওয়া হচ্ছে। এখানে হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই। এখানে সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নাই। এই স্লোগান তুলে প্রতিটি এলাকার মানুষকে সচেতন করতে হবে। নাহলে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা ভীষণভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সব শেষে একটাই প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে প্রত্যাশা, তারা এলাকায় উন্নয়ন করবে।আতঙ্ক ছড়াবে কেন? -----অপা
More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক