সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ আন্তর্জাতিক রাজনীতির বাস্তবতা ও স্বার্থের জটিল সমীকরণ আবারও সামনে এল পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (IMF)-এর ঋণ মঞ্জুর হওয়ার ঘটনায়। ভারত এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করলেও প্রথম দফায় পাকিস্তান পাচ্ছে ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় কিস্তিতেও সমপরিমাণ ঋণ মঞ্জুর হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
আইএমএফ কারা নিয়ন্ত্রণ করে?
আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার নিয়ন্ত্রিত হয় মূলত বিশ্বের ধনী ও উন্নত দেশগুলোর দ্বারা। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী হলো আমেরিকা, যার বর্তমান বিনিয়োগ ১১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার — যা মোট ফান্ডের ১৭ শতাংশ। বিনিয়োগের অনুপাত অনুযায়ী ভোটের ও সিদ্ধান্তের উপর প্রভাবও সে অনুযায়ী বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে আমেরিকার ভোটের মূল্য ১৬.৫২ শতাংশ, যা তাদের কার্যত ভেটো ক্ষমতা দেয়।
পাকিস্তানকে ঋণ প্রসঙ্গে আমেরিকার ভূমিকা
আইএমএফ-এ ঋণ অনুমোদনের জন্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ভোটাভুটি হয়। ভারত সদস্য দেশ হিসেবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে এবং ভোটে অংশ নেয়নি। ভারত মনে করে, অতীতের মতোই পাকিস্তান এই অর্থ সন্ত্রাসে মদদ দিতে ও সীমান্ত সন্ত্রাস চালাতে ব্যবহার করবে।
তবে আমেরিকা এই প্রস্তাবে কী ভোট দিয়েছে, তার কোনও সরকারি তথ্য পাওয়া যায়নি — কারণ আইএমএফ এই ধরনের ভোটাভুটির তথ্য গোপন রাখে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমেরিকা চাইলে ভেটো প্রয়োগ করে এই ঋণ মঞ্জুরি ঠেকাতে পারত, যা তারা করেনি। অতীতে এমন বেশ কিছু প্রস্তাবে আমেরিকা পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে — এটাই এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যের ইঙ্গিত বহন করে।
এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হলো, আন্তর্জাতিক রাজনীতি কেবল নীতি ও আদর্শ নয় — বরং এটি এক জটিল গেম যেখানে শক্তিধর দেশগুলোর কূটনৈতিক স্বার্থ, অর্থনৈতিক প্রভাব এবং ভূরাজনৈতিক কৌশল মূল চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে। ভারতের বিরোধিতা সত্ত্বেও পাকিস্তানকে ঋণ মঞ্জুর হওয়া এই বাস্তবতারই প্রতিফলন।

More Stories
আমেরিকার শাটডাউন ও তার ছায়া: ভারতীয় অর্থনীতি ও প্রবাসীদের জন্য কী বার্তা?
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ভাষণ দিলেন নেপালের সুশীলা কার্কি
হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু