October 5, 2025

রাত পোহালেই প্রসাদ বিলি, অভিনব মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার

সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ দিঘার জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বিলি করতে অভিনব মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার করতে চলেছে আরামবাগ মহাকুমার আরামবাগ ব্লক প্রশাসন। রাত পোহালেই আরামবাগ মহকুমাতে দিঘার জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বিলি শুরু হবে। যদিও বিরোধীরা প্রথম থেকেই জগন্নাথ ধাম এবং প্রসাদ বলাতে আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তবে এখন মহাপ্রসাদ’ বদলে গেছে ‘স্যুভেনির’-এ, ঠিক যেমনভাবে দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরকে থেকে জগন্নাথ ধাম কালচারাল সেন্টার। তেমনই সরকারি নির্দেশিকায় প্রসাদ বিলির বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, ‘স্যুভেনির বণ্টন’। এই বন্টন রেশন ডিলারদের মাধ্যমে দুয়ারে রেশনে ২০ই জুন থেকে ৪ঠা জুলাই এর মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। আরামবাগ মহকুমা জুড়ে বিভিন্ন এলাকার রেশন গ্রাহকদের অভিযোগ কবে, কোথায়, কিভাবে এই প্রসাদ পাওয়া যাবে তা কোন ভাবে জানা যাচ্ছে না, এই বিষয়ের প্রশাসন কোনরকম প্রচার করছে না কেন? সবাই যাতে প্রসাদ না পেতে পারে তার জন্য কি এই গোপনীয়তা? সেই নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে উঠছে প্রশ্ন। পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য যে সমস্ত জায়গায় বিতরণ হয়েছে সেখানে প্রসাদ প্যাকেটের গায়ে আইন অনুযায়ী প্রসাদ তৈরির তারিখ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ থাকছে না। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে মহাকুমার সমস্ত ব্লক বা অঞ্চলগুলিতে একই দিনে বিতরণ হবে না,আগামীকাল ২১ তারিখ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে প্রসাদ বিলি আরামবাগ মহকুমাতে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। এই প্রসাদ বিলি নিয়ে রেশন ডিলারদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ প্রশাসন রেশন ডিলারদের হাতে এলাকা অনুযায়ী হাজার হাজার গ্রাহকের নাম প্রিন্ট করা ৭০ থেকে ১০০ পাতার কাগজ মাস্টাররোল আকারে করে দিয়েছে। সেই মাস্টাররোল থেকে হাজার হাজার গ্রাহকের মধ্যে থেকে নাম খুঁজে বের করে তাদের স্বাক্ষর বা টিপ সহি করিয়ে এবং প্যাকেটে সিরিয়াল নাম্বার দিয়ে প্যাকেট গ্রাহকের হাতে তুলে দিতে হবে। এতেই সমস্যা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে রেশন ডিলাররা,এই প্রক্রিয়াতে বিতরণ করতে হলে যথেষ্ট সময় লাগবে, লাইনে থাকা গ্রাহকদের অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে, দেরি হওয়ার কারণে সকলের প্রসাদ নাও পেতে পারেন,যে কোন মুহূর্তে গন্ডগোল সৃষ্টি হতে পারে। রেশন ডিলারদের একাংশের দাবি সাদা কাগজে গ্রাহকের নাম, রেশন কার্ড নাম্বার এবং স্বাক্ষর বা টিপ সহি দিয়ে অতি সহজ পদ্ধতিতে এবং কম সময়ের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া যাবে, অথচ তা না করে প্রশাসন জটিল প্রক্রিয়া মাধ্যমে বিতরণ করতে চাইছে। আরামবাগ ব্লক আরামবাগ মহকুমার মধ্যে থেকেও তাদের বিতরণ প্রক্রিয়া হবে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আর অন্যান্য ব্লক গুলি ক্ষেত্রে বিতরণ হবে হাতে কলমে,আর মহাকুমা শাসকই কেন এ বিষয়ে সকল ব্লককে অ্যাপের সুবিধা দিতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না? মহকুমা প্রশাসনের এই দ্বিচারিতার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না অন্যান্য ব্লকের রেশন ডিলাররা। অ্যাপের মাধ্যমে বিতরণ হলে খুব সহজেই রেশন কার্ড নাম্বার এন্ট্রি করে প্রসাদ বিতরণ করা যাবে এবং বিতরণের হিসাব যেমন- কারা প্রসাদ গ্রহণ করলেন, কারা করলেন না, কখন প্রসাদ গ্রহণ করেছেন, কতগুলি বাকি রইল তা সরাসরি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে প্রশাসনের কাছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নজরদারি করতে সুবিধা হবে। এ বিষয়ে অনেকেই আরামবাগ ব্লক প্রশাসনের এই মোবাইল অ্যাপের প্রযুক্তিতে ও উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আরামবাগ ব্লকের অ্যাপ-ভিত্তিক এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই জেলার প্রশাসনিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে। প্রযুক্তিকে মেনে নিয়ে মানিয়ে নিয়ে কঠিন কাজ যে সহজ করে করা যায় তা দেখিয়ে দিতে চলেছে হুগলি জেলার আরামবাগ ব্লক। অথচ এই একই কাজে অন্যান্য ব্লকগুলি দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মচারী বা আধিকারিকদের অদূরদর্শিতা এবং সমন্বয়ের অভাবে অন্যান্য ব্লকের রেশন ডিলাররা পড়েছেন ফাঁপড়ে। দুয়ারে রেশনে বিতরণ করার কথা এই মহাপ্রসাদ, কিন্তু দুয়ারে রেশনে এই প্যাকেট নিয়ে গেলে প্যাকেট নষ্ট হয়ে যেতে পারে অথবা গ্রাহকদের অতি উৎসাহের কারণে লুট হয়ে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে দোকান থেকে নিরাপত্তা দিয়ে এই বিতরণ করলেই সুবিধা হবে মনে করছেন রেশন ডিলাররা। এখন কিভাবে সহজ পদ্ধতিতে বিতরণ করা যায় সেটাই দেখার বিষয়।

Loading