October 5, 2025

“ড্রামাটিক সেক্সুয়াল সুইসাইড”

সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ এক দেশে ছিল এক অদ্ভুত রাজ্য — “মধুকোষ”। এই রাজ্যে ছিল না কোনো সিংহাসন, ছিল না রাজপ্রাসাদ। পুরো রাজ্যটাই ছিল মধু আর পরাগে মোড়ানো এক গোল গোল মোমের ঘরে, যাকে সবাই মৌচাক বলে চিনত।

এই রাজ্যের শাসন করতেন একজন মাত্র রাণী মৌমাছি — তার নাম ছিল রানিমা সুগন্ধা। রানিমার কাজ ছিল একটাই — প্রতিদিন হাজার হাজার ডিম পাড়া। সে দিনে ১৫০০ থেকে ২৫০০টি ডিম দিত, যেন একটা নতুন প্রজন্ম রওনা দেয় রাজ্যের কাজ সামলাতে।

রাজ্যে বাস করত হাজার হাজার কর্মী মৌমাছি — তারা ছিল রানিমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সৈনিক।
তারা দিনের পর দিন ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াতো, পরাগ আর মধুরস সংগ্রহ করত।
একটি মাত্র ১ কেজি মধু আনতে গিয়ে তাদের ৪০ লক্ষ ফুলে ঘুরতে হতো, আর ৯০ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে হতো — যেন চাঁদের কক্ষপথ ঘুরে আসছে!

তাদের ঘরে ফেরার সময় মুখে থাকত ছোট্ট এক ফোঁটা মধু, কিন্তু বুকে থাকত এক সমুদ্র শ্রমের গর্ব।

এই রাজ্যে ছিল একদল পুরুষ মৌমাছিও, যাদের নাম দেওয়া হয়েছিল “ধর্মসভা”-র সদস্য।
তারা ছিল রাজ্যের সবচেয়ে অলস নাগরিক — কোনো কাজ করত না, এমনকি নিজের খাবারও নিজে খেতে পারত না!
তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল রাণী সুগন্ধার সাথে মিলিত হওয়া

একদিন এল “দি মিটিং ফ্লাইট” — বিশেষ দিন।
রাণী সুগন্ধা আকাশে ওড়ালেন, আর সঙ্গেসঙ্গেই ধর্মসভার শত শত পুরুষ মৌমাছি দৌড় দিল।
রাণী একে একে ১৮ থেকে ২০টি পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলিত হলেন —
কিন্তু…
প্রতিটি মিলনের পর পুরুষ মৌমাছির যৌনাঙ্গ ভেঙে যায় আর সে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে
এই কারণে এ ঘটনাকে বলে “ড্রামাটিক সেক্সুয়াল সুইসাইড”

এদিকে মৌচাকের ভেতরেও চলছিল নাটকীয় ঘটনা।
একদিন এক নতুন রাণীর ডিম ফুটে বের হল — ছোট্ট রাণী কলি
কিন্তু সবাই জানত, রাণী সুগন্ধা আর কলি একসাথে থাকতে পারবে না
তাই কর্মীরা তাকে লুকিয়ে রাখল, যতক্ষণ না সে বড় হয়।

যেই কলি বড় হলো, শুরু হল এক ভয়ংকর যুদ্ধ।
রাণী সুগন্ধা বনাম নবীন রাণী কলি!
দুই রাণী মুখোমুখি দাঁড়াল —
হয়তো এক রাণী মারা যাবে,
নইলে কেউ একজন নতুন মৌচাক গড়ে রাজ্য ছেড়ে যাবে।

এবার কলি জয়ী হল — সে পুরোনো মৌচাকে রেখে নতুন রাজ্য গড়তে উড়ে গেল,
নতুন সূর্যের নিচে আরেক মধুর রাজ্য তৈরির স্বপ্ন নিয়ে।

তবে যদি রাণী আকস্মিকভাবে মারা যান, তাহলে রাজ্য থেমে থাকে না।
মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে সব কর্মী মৌমাছি তা জেনে যায়,
তারা সবাই মিলে তৈরি করে নতুন রাণী —
যেন রাজ্য চলে অবিরাম…
শ্রম, ত্যাগ আর একতা দিয়ে।

এই ছিল মধুকোষ রাজ্যের গল্প
যেখানে রাজা নেই, কিন্তু শাসন চলে নিখুঁত নিয়মে।
যেখানে প্রত্যেকে নিজের দায়িত্বে বিশ্বস্ত,
আর যেখানে ভালোবাসা আর মৃত্যু একই উড়ালপথে লেখা থাকে।

Loading