সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ উত্তর প্রদেশের বাগপতের প্রত্নতাত্ত্বিক খননে পাওয়া ধাতুর অস্ত্র এখন শুধু ইতিহাসের নয়, ভারতের প্রাচীন প্রযুক্তি ও সমাজ কাঠামোর নতুন সাক্ষ্যবাহক। এই অস্ত্রটি যখন বুদাপেস্টের ল্যাবে কার্বন ডেটিং-এর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়, তখন দেখা যায়—এর বয়স আনুমানিক পাঁচ হাজার বছর!
এতদিন ইতিহাসবিদদের অভিমত ছিল, ভারতে আধুনিক ধাতুবিদ্যার (মেটালার্জি) সূচনা হয়েছিল যিশুর জন্মের প্রায় এক হাজার বছর আগে, অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ সালের আশেপাশে। কিন্তু এই নতুন প্রমাণ দেখিয়ে দিল যে ভারতে ধাতব অস্ত্র নির্মাণের ঐতিহ্য খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সাল বা তারও আগে থেকে চালু ছিল।
এই আবিষ্কারের তাৎপর্য কী?
- এটি প্রমাণ করে, চালকোলিথিক যুগেই (তাম্র-পাথর যুগ) গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চলে একটি যোদ্ধা সমাজ ছিল, যারা ধাতব অস্ত্র ব্যবহার করত।
- অস্ত্রের গঠন ও ধরন দেখে বোঝা যায়, এটি শুধুই প্রতিরক্ষার জন্য নয়, বরং সুশৃঙ্খল যুদ্ধ কৌশল ও ধাতব প্রযুক্তির উন্নত দক্ষতারও ইঙ্গিত দেয়।
- এই সময়কালটি অনেকাংশে মহাভারতের পৌরাণিক কাল-এর সঙ্গে মিলে যায়। যদিও মহাভারত একটি ধর্মীয় মহাকাব্য, তবুও এর ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট যে বাস্তব ঐতিহাসিক ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, সেই সম্ভাবনা এই আবিষ্কারে নতুন করে উঠে আসে।
মিথ যখন ইতিহাসের ছায়া পায়…
আমরা হয়তো মহাভারতের অস্ত্রশস্ত্র, রথযুদ্ধ বা ধাতব বর্মের বিবরণকে কেবল কাব্যিক অলঙ্কার বলে মনে করতাম। কিন্তু এই আবিষ্কার সেইসব ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায়। এখন প্রশ্ন উঠতে বাধ্য — “মহাভারতের কাহিনি কি শুধুই কল্পনা? নাকি তার পেছনে লুকিয়ে আছে প্রাচীন ভারতের বাস্তব ইতিহাস?”
ইতিহাসের পাতা থেকে প্রমাণ উঠে এলেও, তাকে বুঝে নিতে লাগে খোলা মন, অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টিভঙ্গি আর যুক্তির আলো।
ভারতের প্রাচীনতা শুধু গর্বের বিষয় নয়, গবেষণারও অনন্ত ক্ষেত্র।

More Stories
১৩ হাজার ডলারের বিনিময়ে কেনা এক টুকরো বিরানভূমি, যা পরিণত হলো প্রকৃতির স্বর্গে
কেন ব্যবহার করা হয় “ঘট” হিন্দু পূজায়?
মা দুর্গার মুখে উর্ণনাভ: মহামায়ার চিহ্ন