সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ বাংলা সিনেমার প্রসার ও সুরক্ষার লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এক গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্সের সব স্ক্রিনে বছরে ৩৬৫ দিনই অন্তত একটি প্রাইম টাইম শোতে বাংলা ছবি প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। প্রাইম টাইম হিসেবে বিকেল ৩টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এই পদক্ষেপকে বহু শিল্পী, পরিচালক এবং সাংস্কৃতিক মহল স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি সহায়ক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারে। কিন্তু এর পাশাপাশি উঠছে কিছু জরুরি প্রশ্ন — শুধুমাত্র পর্দা বরাদ্দ করলেই কি সিনেমা সফল হবে?
একজন সচেতন নাগরিক ও সংস্কৃতিপ্রেমীর মন্তব্যে উঠে এসেছে এক গভীর ক্ষোভ ও হতাশা:“খুব ভালো উদ্যোগ, কিন্তু প্রতি বছর হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে জীবিকার সন্ধানে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে। কারা হলে যাবে? কে সিনেমা বানাবে? কে গান লিখবে, কে সুর দেবে ?‘
বস্তুত, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির টিকে থাকার জন্য শুধু প্রদর্শনের সুযোগ নয়, প্রয়োজন সৃষ্টিশীল অর্থনীতি, কর্মসংস্থান এবং সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা।
যখন হাজার হাজার পরিবার আজ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বাংলা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে, তখন সিনেমা হলে দর্শকসংখ্যা বাড়ানো কেবল নীতির মাধ্যমে সম্ভব নয়।
একজন মন্তব্যকারীর কথায়, “হাজার হাজার বাড়ি খালি পড়ে আছে, লোকজন নেই! ভাষা বাঁচাতে চাইলে আগে চাই আর্থিক শক্তি। সব তো দেশান্তর হয়ে যাচ্ছে। কজন বা অনুপম রায় আছেন যিনি ফিরে আসবেন?”
এই বাস্তবতা সামনে রেখেই সরকারকে ভাবতে হবে—প্রতিভা শুধু সৃষ্টি করে নয়, ধরে রাখাও একটি প্রশাসনিক দায়িত্ব। সিনেমার হলে প্রাইম টাইম বরাদ্দের পাশাপাশি প্রয়োজন প্রতিভাবানদের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা, প্রশিক্ষণ, এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা।
বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ সত্যিই উজ্জ্বল হতে পারে, যদি তার পিছনে থাকে এক শক্ত ভিত — দর্শক, শিল্পী ও সমাজের সম্মিলিত আর্থ-সাংস্কৃতিক উন্নয়ন।

More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক