October 5, 2025

মহালয়ার ভোরে রেডিও শোনার ঐতিহ্য ও বর্তমান বাস্তবতা

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ; আসছে মহালয়া। ভোরবেলা আকাশবাণীতে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শোনার যে অটুট পরম্পরা, তা এখনও বহু মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কিন্তু আজকের এই ডিজিটাল যুগে রেডিওর ব্যবহার আগের মতো নেই।

যাদের বাড়িতে বয়স্ক মানুষ আছেন, তাদের কাছে এখনও পুরনো ট্রানজিস্টার বা রেডিও মজুত আছে। মহালয়ার ভোরে সেই যন্ত্রে অনুষ্ঠান শোনার জন্য এখনো অনেকে রেডিও রিপেয়ার করান। তবে সমস্যাও কম নয়—কারণ রেডিও মেরামতির কারিগর আজকাল প্রায় নেই বললেই চলে।

রেডিও টেকনিশিয়ানদের মতে, এই যন্ত্র সঠিকভাবে টিউন করতে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা লাগে। নতুন প্রজন্ম আর রেডিওর মেরামতির কাজ শেখে না। ফলে অভিজ্ঞ মেকানিকরাই ভরসা। কিন্তু তাদের সংখ্যাও হাতে গোনা।

অন্যদিকে, পুরনো রেডিওর যন্ত্রাংশ এখন সহজে পাওয়া যায় না। যেগুলো পাওয়া যায়, সেগুলোর দামও অনেক বেশি। কারণ, বাজারে রেডিওর চাহিদা ও উৎপাদন দুই-ই কমে গেছে। এমনকি নতুন রেডিওও তুলনামূলক দামী এবং সব দোকানেই মেলে না।

আরামবাগের এক প্রবীণ রেডিও মেকানিক জানালেন—
“আগে মহালয়ার আগে প্রচুর মানুষ রেডিও সারাই করাতে আসতেন। এখন সেই ভিড় নেই। তবু যাঁরা পুরনো রেডিওর ভক্ত, তাঁরাই ভোরে অনুষ্ঠান শোনার আগে রেডিও নিয়ে আসেন।”

একজন প্রবীণ বেতার শ্রোতার কথায়—
“টিভি বা মোবাইল দিয়ে মহালয়া শোনা যায় ঠিকই, কিন্তু রেডিওর সেই আবেগ, সেই অনুভূতি আলাদা। বহু বছরের অভ্যাস তো আর একদিনে যায় না।”

তাই, রেডিওর জনপ্রিয়তা কমলেও, মহালয়ার ভোরে ট্রানজিস্টার চালিয়ে শোনার আনন্দ আজও অনেক বাঙালির কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

Loading