সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ গণেশ চতুর্থী পালনের মাধ্যমে জীবনে সৌভাগ্য, বিদ্যা, বুদ্ধি ও সমৃদ্ধি লাভ হয়। শাস্ত্রে বলা হয়েছে—
“যত্র যত্র স্থিতো দেবঃ সর্ববিঘ্নঃ প্রণাশিতঃ।”
অর্থাৎ, যেখানে গণেশ বিরাজমান, সেখানে সকল বাধা বিনষ্ট হয়।
আজ সারা দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী—বাধা নাশক, বিদ্যা, বুদ্ধি ও সম্পদের দেবতা শ্রী গণেশের আবির্ভাব দিবস। ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়।
পুরাণ মতে, দেবী পার্বতী নিজের দেহের মলিনতা দিয়ে গণেশের জন্ম দেন এবং শিবের আশীর্বাদে তিনি হলেন দেবগণনায় প্রথম পূজিত। তাই কোনো মঙ্গলকর্ম বা পূজা শ্রীগণেশের নাম না নিয়ে শুরু হয় না।
মহাত্ম্য ও গুরুত্ব
- গণেশকে বলা হয় বিঘ্নহর্তা, যিনি জীবনের সকল বাধা দূর করেন।
- তাঁকে বুদ্ধি, বিদ্যা ও স্মৃতির অধিষ্ঠাতা দেবতা মনে করা হয়।
- ভক্তরা বিশ্বাস করেন, এই দিনে আন্তরিকভাবে পূজা করলে সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি ও সফলতা লাভ হয়।
- ব্যবসায়ীরা নতুন খাতা-ব্যবহার শুরু করেন এই সময়ে।
- ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যা ও বুদ্ধির বর কামনা করে।
মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থীর আড়ম্বর সারা দেশজুড়েই প্রসিদ্ধ। তবে বাংলাতেও আজ বহু পরিবার ও মণ্ডপে শ্রীগণেশ পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, “একচতুর্থী” তিথিতে শ্রীগণেশের পূজায় দুধ, দূর্বা ও মোদক নিবেদন করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয় এবং জীবনের সমস্ত অশুভ শক্তি দূর হয়।
পুরাণ মতে, দেবী পার্বতী একদিন স্নানকালে নিজের দেহের মলিনতা দিয়ে এক পুত্র তৈরি করেন এবং তাঁকে দ্বাররক্ষী করে রাখেন। ঠিক তখন ভগবান শিব আশ্রমে প্রবেশ করতে চাইলে গণেশ তাঁকে বাধা দেন। ক্রোধান্বিত হয়ে শিব তাঁর মস্তক ছিন্ন করেন। পরে পার্বতীর আকুল প্রার্থনায় শিব গণেশকে পুনর্জীবন দেন এবং উত্তর দিকের প্রথম প্রাণী হাতির মস্তক বসিয়ে তাঁকে জীবন দান করেন। সেই থেকে শ্রীগণেশ দেবগণনায় “প্রথম পূজিত” হয়ে ওঠেন।
আরেক কাহিনীতে বলা হয়, ঋষিদের অভিশাপে চন্দ্রদেব শ্রীগণেশের উপহাস করেছিলেন। এর ফলে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষ চতুর্থী তিথিতে গণেশ পূজার মাহাত্ম্য জন্ম নেয়।
গৃহস্থালি কিংবা মণ্ডপ—যেখানেই হোক না কেন, কিছু সাধারণ নিয়ম মানলে পূজা সম্পূর্ণ হয়:
- সকালবেলা স্নান ও শুদ্ধবস্ত্র পরিধান করে পূজার ব্যবস্থা করতে হয়।
- একটি আসনে শ্রীগণেশের মূর্তি বা ছবি স্থাপন করতে হয়। দক্ষিণমুখে বসানো উচিত নয়।
- পূজার সময় প্রথমেই ঋষি, গুরু ও গণেশের ধ্যান করতে হয়।
- গণেশকে প্রিয় দূর্বা ঘাস, লাল ফুল, দুধ-দই-ঘি-মধু-মিষ্টি, বিশেষ করে মোদক নিবেদন করা হয়।
- পূজায় একচতুর্থী ব্রতকথা পাঠ করা বাধ্যতামূলক।
- ভক্তরা এই দিনে গণপতি মন্ত্র জপ করেন— “ওঁ গণ গণপতয়ে নমঃ”
- সন্ধ্যায় পুনরায় প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি করতে হয়।
- উপবাস বা নিরামিষ ভোজন ব্রতপালনের অন্যতম অংশ। অনেকেই সারাদিন ফলাহার করেন।
- ভক্তরা বিশ্বাস করেন, এই দিনে শ্রীগণেশকে স্মরণ করলে জীবনের বাধা, ঋণ, দুঃখ ও অশুভ প্রভাব দূর হয়।
- মহারাষ্ট্রে বিশেষভাবে গণপতি বিসর্জন হয়, তবে বাংলায় সাধারণত পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করেই ব্রত সম্পূর্ণ করা হয়।

More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক