সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ ওয়াশিংটনে কংগ্রেসের অচলাবস্থা আবারও প্রশাসনিক শাটডাউনের পথে ঠেলে দিয়েছে আমেরিকাকে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মতপার্থক্যের কারণে বাজেট বিল অনুমোদন না হওয়ায় সরকারি কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুধু আমেরিকার অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং এর প্রভাব পড়তে পারে ভারতীয় অর্থনীতি ও প্রবাসী ভারতীয়দের উপরও।
মার্কিন অর্থনীতি বৈশ্বিক আর্থিক বাজারের কেন্দ্রবিন্দু। শাটডাউনের ফলে ডলারের দোলাচল শুরু হলে ভারতীয় রুপির উপর তার চাপ পড়তে বাধ্য। রুপির দরপতন হলে আমদানি খরচ বাড়বে, বিশেষত তেল ও প্রযুক্তি নির্ভর পণ্য ক্ষেত্রে। আবার আইটি ও সফটওয়্যার পরিষেবা খাতে মার্কিন চাহিদা কমে গেলে ভারতের রপ্তানি আয়ও ধাক্কা খেতে পারে।
শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রেও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। আমেরিকার শাটডাউনের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়িয়ে অর্থ টেনে নিতে পারেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে ভারতীয় বাজারে।
আমেরিকায় প্রায় ৪০ লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষ থাকেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি করেন। শাটডাউন হলে তাঁদের বেতন বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এমনকি ভিসা, অভিবাসন সংক্রান্ত ফাইল প্রক্রিয়াকরণেও বিলম্ব ঘটতে পারে। ফলে পড়াশোনা বা চাকরির জন্য ভারতে থাকা অনেক তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন আটকে যেতে পারে।
আমেরিকা বারবার গণতন্ত্রের দৃষ্টান্ত হিসেবে সামনে আসে। অথচ অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে সরকারের এই অচলাবস্থা সেই গণতন্ত্রকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। ভারতের মতো বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশগুলির জন্য এটি একটি শিক্ষা—গণতন্ত্র কেবল নির্বাচন নয়, বরং কার্যকর নীতি ও প্রশাসনের উপরই নির্ভরশীল।
আমেরিকার শাটডাউন নিয়ে ভারতীয়দের কেবল দর্শক হয়ে থাকার সুযোগ নেই। বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে ভারতের গভীর যোগ থাকায় মার্কিন প্রশাসনিক অচলাবস্থার প্রতিটি অভিঘাত এখানে এসে পৌঁছাবে। ফলে ভারতীয় নীতি-নির্ধারকদেরও এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে—রুপির স্থিতি রক্ষা থেকে শুরু করে প্রবাসী ভারতীয়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করা—সব ক্ষেত্রেই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

More Stories
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ভাষণ দিলেন নেপালের সুশীলা কার্কি
হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু
দিকদর্শন উদ্ভিদ বা পথিকের উদ্ভিদ