সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ: রাতারাতি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড হাতে পেয়ে আশার আলো ফুটে উঠল এক হতদরিদ্র পরিবারে। সেই কার্ডের মাধ্যমেই আগামী মঙ্গলবার কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে হৃৎপিণ্ডের জটিল অস্ত্রোপচার হবে আরামবাগ পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নওপাড়ার বাসিন্দা আলিয়া বিবির। ৪৬ বছর বয়সী বিধবা আলিয়া বিবিদের আর্থিক অবস্থা একদম ভাল নয়। অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে তাঁদের সংসার চলে। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে আলিম চাষবাস দেখাশোনা করে। তবে জমি মাত্র কাঠা দশেক। ছোট ছেলে হালিম গাড়ি চালায়। যন্ত্রণাকাতর শরীরে আলিয়া বিবি জানান, সপ্তাহ দু’য়েক আগে তিনি বাড়ির কাছেই হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। তাঁর গোড়ালিতে চোট লাগে। বদরক্ত জমে যায়। গোড়ালি থেকে হাঁটু পর্যন্ত একেবারে কালো হয়ে যায়। তখন তাঁরা আরামবাগের এক চিকিৎসকের কাছে ছুটে যান। কিন্তু দু-তিনদিন চিকিৎসার পর ওই চিকিৎসক তাঁকে বর্ধমানে চিকিৎসা করানোর জন্য বলেন। বর্ধমান গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে কলকাতার কোন নামি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে যাওয়ার কথা বলেন। এরপর তাঁরা বেহালার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে যোগাযোগ করেন। সেখানের চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর পায়ের অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় ধরা পড়ে তাঁর হৃদপিন্ডের একটা অংশ ব্লক হয়ে গেছে। তাই সবার আগে খুব তাড়াতাড়ি হৃৎপিণ্ডের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। তারপর পায়ের অস্ত্রোপচার হবে। কিন্তু এর জন্য বেশ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন। এই ঘটনায় একেবারে অথৈ জলে পড়ে যান আলিয়া বিবি ও তাঁর ছেলেরা। তাঁদের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডও ছিল না। যদিও এবার ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে তাঁরা ফরম ফিলাপ করেছিলেন। তার ছবি তোলার তারিখ আগামী বৃহস্পতিবার। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার অস্ত্রোপচারের তারিখ ঠিক করেছেন। তাই শনিবার বিকেলে তাঁরা যোগাযোগ করেন আরামবাগ পুরসভার বিদায়ী উপপুরপ্রধান রাজেশ চৌধুরীর সঙ্গে। রাজেশ চৌধুরী সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলিয়া বিবি ও তাঁর পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরির ব্যবস্থা করে দেন। তড়িঘড়ি ছবি তুলে রাতেই তাঁদের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় অভিভূত আলিয়া বিবি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে এর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। তিনি পাশে আছেন বলেই আমরা মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছি। নাহলে হয়তো মায়ের অস্ত্রোপচার সম্ভব হতো না। এবিষয়ে আরামবাগ বিডিও কৌশিক ব্যানার্জি বলেন, যাদের চিকিৎসার জরুরী প্রয়োজন তাদের তড়িঘড়ি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে প্রত্যেকেই এই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পায় সেজন্য আমরা সবসময় সচেষ্ট রয়েছি।
More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক