সোমালিয়া সংবাদ, ফুরফুরা শরিফ: রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। আর সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ সকলেরই ফোকাস এখন শাসক ও বিরোধী দলের কোন হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীদের দিকে নয়, ফোকাস শুধু এখন এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হয়েছে। সেটি হল ফুরফুরা শরিফ। আরও পরিষ্কার করে বলা ভাল, ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীকে ঘিরে।আগামী কয়েকদিন তিনি কি সিদ্ধান্ত নেন, কিভাবে জোট তৈরি হয়, সেই জোটে কোন্ কোন্ দল সামিল হবে এইসব নিয়েই এখন জল্পনা শুরু হয়েছে। আর তাই ফুরফুরা শরিফে এখন বিভিন্ন দলের প্রথম সারির নেতা-নেত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই হায়দ্রাবাদ থেকে উড়ে এসে বৈঠক করেছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।বৈঠকের পর তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়ে গেছেন আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বাংলায় লড়াই করবে মিম। অর্থাৎ এই মুহূর্তে সংখ্যালঘু ভোট কেন্দ্রীভূত করতে মিম আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বের উপরেই ভরসা রাখতে চেয়েছেন। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে মিমের জোট তৈরি হলে সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশ তারা পাবে। আর সেই ভোটের বেশিরভাগটাই কাটা যাবে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলি থেকে। এর ফলে বাড়তি অক্সিজেন পাবে বিজেপি। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের আসন সংখ্যা যেমন কমবে, তেমনি বাড়বে বিজেপির আসন। আর ডার্ক হর্স হিসেবে আব্বাস সিদ্দিকী বেশ কয়েকটা আসন পেলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকত না। কিন্তু জল্পনা এখানেই থেমে নেই। এই সব জল্পনার মাঝেই দেশের অন্যতম প্রধান দল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু নেতারা ফুরফুরা শরিফে যাতায়াত শুরু করেছেন। মুখে সৌজন্য সাক্ষাত বললেও বাস্তবে যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য আলোচনা চলছে এ বিষয়ে কারও কোন সন্দেহ নেই। কয়েকদিন আগেই ফুরফুরা শরিফে ঘুরে গেছেন আব্দুল মান্নানের মত রাজ্যের হেভিওয়েট নেতা। তিনি আব্বাস সিদ্দিকের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তখনই জল্পনা শুরু হয়েছিল কংগ্রেস ও বাম জোটের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকী ও মিমের জোটের মেলবন্ধন ঘটবে কিনা। এক্ষেত্রে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের একটি মন্তব্য সেই জল্পনা আরও উসকে দিয়েছে। সূর্যবাবু জানিয়েছেন, আব্বাস সিদ্দিকী কখনও একটি ধর্মের কথা বলেন না। তিনি সকল ধর্মের মানুষের কথাই বলেন। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও কোথাও যেন আব্বাস সিদ্দিকীর লড়াইকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন ওই সিপিএম নেতা। তারপরই রবিবার মালদহ থেকে ফুরফুরা শরিফে ছুটে আসেন এ বি এ গনি খান চৌধুরীর পরিবারের কংগ্রেস নেতারা। এদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করেন সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ও বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী। তাঁদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ করা না হলেও আগামী বিধানসভা নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে এ ব্যাপারে অনেকেই নিশ্চিত। আগামী দিনে আব্বাস সিদ্দিকী ও মিমের সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের জোট একসঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে লড়াই করলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না বলে মনে করছেন অনেকেই। সেক্ষেত্রে শুধু ভোট কাটাকাটি নয়, বেশকিছু আসন দখল করে বিধানসভার নির্বাচনে ফল ঘোষণার পর এই রাজ্যে ক্ষমতা দখলের নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে উঠে আসতে পারে আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এখন দেখার সেই জোট আগে আদৌ দিনের আলো দেখে নাকি জল্পনা জল্পনাই থেকে যায়।
More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক