সোমালিয়া সংবাদ: রবার্ট ব্রাউনিং-এর জনপ্রিয় কবিতা ‘মিটিং অ্যাট নাইট’-এ প্রেমিক রাতের অন্ধকারে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তাঁর প্রেমিকার খামার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেছিলেন। আধখানা হলুদ চাঁদের আলোর নিচে তিন তিনটে দীর্ঘ অন্ধকার মাঠ আর সমুদ্রের রুপালি ঢেউ ভেঙে কাদা বালি পার হয়ে পৌঁছে ছিলেন প্রেমিকার কাছে। জ্বলন্ত দেশলাইয়ের নীল আলোয় দুরুদুরু বুকে দুই প্রেমিক-প্রেমিকার মিলন সমস্ত পাঠককে এখনও নাড়া দিয়ে যায়। এবার ঠিক সেরকমই এক কাণ্ড করে বসলেন ডেল ম্যাকলুগলান।
২৮ বছর বয়সী এই যুবকের বাড়ি আয়ারল্যান্ডে। সমুদ্রের জলের উপর দিয়ে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা জেট স্কি করে আইল থেকে হুইথরণ দ্বীপে পাড়ি দিলেন। কারণ সেখানেই থাকেন তাঁর মনের দোসর, সবচেয়ে কাছের মানুষটি। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা হল ঠিকই, কিন্তু আইন ভঙ্গ করে এই কাজ করায় জুটলো হাজতবাস। জানা গেছে, ডেল স্কটল্যান্ড থেকে আইরিশ সি পার হয়েছিলেন। করোনা মহামারীর জেরে দীর্ঘদিন প্রেমিকার সঙ্গে দেখা হয়নি। কিন্তু এই বিরহ কাতরতা আর সহ্য হচ্ছিল না ডেলের। তাই ঠিক করলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করবেন। সমুদ্রের উপর দিয়েই পাড়ি দেবেন প্রেমিকার কাছে। অথচ কোনদিনই জলের উপর দিয়ে স্কুটার চালাননি। তা সত্ত্বেও নিজের মনের জোরকে সম্বল করে এই অভিযানে নেমে পড়েছিলেন। ডেলের ধারণা ছিল মাত্র চল্লিশ মিনিটে পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। কিন্তু লাগল সাড়ে চার ঘন্টা। সমুদ্র পার হওয়ার পর আরও প্রায় ২৫ কিমি পথ হেঁটে পৌছলেন প্রেমিকার বাড়িতে। পুলিশকে বলেছিলেন, ওখানে তাঁর নিজের বাড়ি। তিনি নিজের বাড়িতেই যাচ্ছেন। কিন্তু পরদিনই পুলিশ জানতে পারে ওই দ্বীপের বাসিন্দা নয় ডেল। তাই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তারপর চার সপ্তাহ হাজতবাস। কারণ গত মার্চ মাস থেকে এই দ্বীপে বাইরের লোকেদের যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। কোভিড আইন অনুযায়ী বাইরে থেকে কেউ এলে তাঁকে অগ্রিম অনুমতি নিতে হবে। যদিও ডেল আগে কয়েকবার অনুমতি পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেখানকার স্থানীয় সরকার তা খারিজ করে দেয়। তাই তাঁর কপালে জুটেছে হাজতবাস।
তবে তিনি প্রেমিকার দেখা পেয়েছেন। দীর্ঘ বিরহ যন্ত্রণা দূর হয়েছে। ডেল নাকি জানিয়েছেন, দেখা করার আগে পুলিশের হাতে পড়েন নি এটাই সবচেয়ে ভালো কথা। আর তা যদি হতো তাহলে হয়তো এত কষ্টের কোন মূল্যই থাকতো না। ভালোবাসার মানুষের জন্য যে কত কিছু করা যায় ডেল আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন। আর প্রেমিকা ৩০ বছর বয়সী মিস জেসিকা রাডক্লিফ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ডেলকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। তাহলে ডেল তাঁর কাছে গিয়ে থাকতে পারবেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ডেল তাকে সত্যি করেই ভালোবাসেন। সে হল আমার কাছে হিরো। আর এই ঘটনার পর থেকে তো রীতিমতো কিংবদন্তী।
More Stories
আমেরিকার শাটডাউন ও তার ছায়া: ভারতীয় অর্থনীতি ও প্রবাসীদের জন্য কী বার্তা?
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ভাষণ দিলেন নেপালের সুশীলা কার্কি
হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু