সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ : যে সমস্ত মানুষ আর্থিক সমস্যায় চিকিৎসা করাতে পারছেন না তাঁদের কাছে আশার আলো হয়ে উঠছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। আবারও তেমনই দুটি ঘটনা ঘটলো আরামবাগে। শুক্রবার সন্ধেয় আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিক ও কর্মীরা এক অসুস্থ রোগীর ছবি তুলে দিয়ে দ্রুত স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করে দিলেন। ওই রোগীর নাম দীনবন্ধু ঘোষ। বাড়ি আরামবাগের মায়াপুর-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুরে। দীনবন্ধুবাবুর একটি মুড়ির কল আছে। কিন্তু অসুস্থতার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে তিনি তেমনভাবে কাজ করতে পারছেন না।
তাঁর ছেলে রাজদীপ ঘোষ জানান, দু’বছর আগে তাঁর বাবা হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন কলকাতা মেডিকেলে ডাক্তার দেখান। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন দীনবন্ধুবাবুর হার্টের দু’টি জায়গা প্রায় ৫০ শতাংশ ব্লক হয়ে গেছে। তারপর থেকেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার হঠাৎই তাঁর বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়। তাঁকে আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু এখানকার চিকিৎসকরা কলকাতার ভাল জায়গায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন। হয়তো দ্রুত অপারেশনের প্রয়োজন হবে। কিন্তু খরচের কথা ভেবে তাঁরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। কয়েকদিন আগে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যসাথীর জন্য ফর্মফিলাপ করেছেন। যদিও ছবি তোলার তারিখ এখনও দেরি আছে। তাই তাঁরা যোগাযোগ করেন আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দীপক মাঝির সঙ্গে। এরপর দীপকবাবু নিজে উদ্যোগ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন। তারপরই শুক্রবার সন্ধেয় হাসপাতালে দীপক মাঝি, আরামবাগ জয়েন্ট বিডিও ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মীরা দীনবন্ধুবাবুদের স্বাস্থ্যসাথীর ছবি তুলে দেন। পাশাপাশি সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের হাতে কার্ডও তুলে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ছেলে রাজদীপ বলেন, প্রশাসন যেভাবে সক্রিয় হয়ে এত দ্রুত কাজ করে দিল তার জন্য আমরা ভীষণ খুশি। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পাশাপাশি দীপকবাবুকেও ধন্যবাদ।
অন্যদিকে শনিবার আরামবাগ শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অসুস্থ শুভাশিস রায়কে অ্যাম্বুলেন্সে করে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে দিলেন আরামবাগ পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দী। তাঁর এই মানবিক উদ্যোগে ভীষণ খুশি শুভাশিসবাবুর পরিবারের লোকেরা। শুভাশিসবাবুর কাকা বরুণ রায় জানান, শুভাশিস বাড়ির মধ্যে একমাত্র উপার্জনকারী। একটি মার্বেল পাথরের দোকানে কাজ করতেন। চার মাস আগে কাজ করার সময় তাঁর পা কেটে যায়। শরীরে সুগার থাকায় গ্যাংগ্রিন হয়ে যায়। প্রথমে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল ও পরে কলকাতা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসকরা তাঁকে প্লাস্টিক সার্জারির পরামর্শ দেন। কিন্তু খরচের কথা ভেবেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা মনে আসে। তাই তড়িঘড়ি বুধবার আরামবাগে ফিরে আসেন। যোগাযোগ করেন আরামবাগ পুরসভার সঙ্গে। কিন্তু তিন নম্বর ওয়ার্ডের পরবর্তী দুয়ারে সরকার ক্যাম্প এখনও দেরি আছে। শনিবার ছিল ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ক্যাম্প। কিন্তু শুভাশিসবাবু হাঁটাহাঁটি তো দূরের কথা তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতেই পারছেন না। আর তা জানতে পেরেই পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দী পুরসভার অ্যাম্বুলেন্সে করে শুভাশিসবাবুকে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরের নওপাড়ায় ওই ক্যাম্পে গিয়ে ছবি তোলার ব্যবস্থা করে দেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ভীষণ খুশি শুভাশিস বাবুর পরিবার। এ বিষয়ে তাঁর মা পূর্ণিমা রায় বলেন, আমরা চাই ছেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক। এভাবে পুরসভা এবং মুখ্যমন্ত্রী পাশে থাকায় আমরা ভীষণ খুশি।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি