সোমালিয়া সংবাদ, কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে তৃণমূলের ভাঙ্গন যেন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ক্ষোভ বিক্ষোভে জর্জরিত তৃণমূলে যেন সবসময় আতঙ্ক। কখন কোন্ নেতা বা মন্ত্রী দল ছেড়ে বেরিয়ে যাবেন কেউ কিছুই বুঝতে পারছেন না। অনেকেই এখন বেসুরো গান ধরেছেন। আর সেই তালিকা প্রতিদিন দীর্ঘতর হচ্ছে।
সাধন পান্ডে, গৌতম দেব, প্রবীর ঘোষাল, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, বৈশালী ডালমিয়া, প্রসূন ব্যানার্জি থেকে শুরু করে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী দলে স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতার কথা বলছেন। দেখা যাচ্ছে যাঁরা এই ধরনের মন্তব্য করছেন তাঁদের অনেকেই পরবর্তীকালে দল ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। নয়তো একেবারেই অন্য দলে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নয়। যেমন অভিনেত্রী সাংসদ শতাব্দী রায়। তিনি দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও পরবর্তীকালে দলের যুবরাজ অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি কিন্তু দলে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত কতদিন থাকবেন তা নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। আর তারই মধ্যে ‘যত মত তত পথ’- এর ধারণায় বিশ্বাসী বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি শুক্রবার পদত্যাগ করলেন। গত কয়েকদিন ধরেই তাঁর ক্ষোভ অভিমান যেন এই পথেরই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল। অনেকে হয়তো আশা করেছিলেন শতাব্দী রায়ের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে রাজিব ব্যানার্জির ক্ষেত্রেও হয়তো সেরকম বৈঠকের মাধ্যমে মান অভিমান গলে যাবে। কিন্তু তেমনটি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার কলকাতায় পা রাখার আগেই তৃণমূলের মন্ত্রিসভা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন রাজীব ব্যানার্জি।
তৃণমূল মন্ত্রিসভায় যে সমস্ত নেতা-মন্ত্রীরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য পরিচিত তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই রাজীব ব্যানার্জি। সকলে তাঁকে নিপাট ভালো মানুষ বলেই চেনেন। তাছাড়া সাংগঠনিক দিক দিয়েও তাঁর গুরুত্ব কম নয়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা গত লোকসভা নির্বাচনে এই রাজীব ব্যানার্জির হাত ধরেই শ্রীরামপুর সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি তাঁর হার বাঁচিয়েছেন। অথচ সেই রাজীব ব্যানার্জি বর্তমানে দলের কাছে অনেকটা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিলেন বলে তাঁর অভিমান। এখন দেখার যত মত তত পথ-এ বিশ্বাসী রাজীব ব্যানার্জি কোন্ পথে যান। আগামী দিনে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন নাকি অন্য কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তা কেবল সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু তৃণমূলের কাছে এই প্রবণতা আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। যাঁরা বেসুরো গান ধরেছেন তাঁঁদের বেশ কয়েকজন যে দল ছাড়বেন এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের খেলা মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলকেও হার মানালে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।
![]()

More Stories
পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের ডাক ব্রিগেডে, রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ সনাতন সংস্কৃতি সংসদের
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ইভিএম–ভিভিপ্যাটের এফএলসি শুরু রাজ্যে, চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত
হাতুড়ে ডাক্তারি বনাম পাশ করা ডাক্তার—অরাজকতার জঞ্জালে বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা