সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: কোজাগরী পূর্ণিমাতেই ১৮ হাতের মহালক্ষ্মী পুজোয় মাতে বামনগোলা, কেন লক্ষ্মীর এমন রূপ?
মালদা থেকে বাঁকুড়া, বর্ধমান থেকে কোচবিহার, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে জেলায় জেলায় সাজ সাজ রব। বামনগোলাতেও আজ উৎসবের মেজাজ। দুর্গা নয়, তাদের কাছে বছরের সবথেকে বড় অনুষ্ঠান বা উৎসব এটি। এখানে মা লক্ষ্মীর হাত কেন দুটোর বদলে ১৮টা সেই নিয়ে প্রচলিত সুন্দর গল্প। এই পুজোকে ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠেন আশপাশের গ্রামের মানুষ।কোজাগরীর পূর্ণিমা উপলক্ষে গোটা রাজ্য় জুড়ে সাজসাজ রব। কোনও কোনও এলাকায় দুর্গা নয়, মূল উৎসব এই লক্ষ্মীপুজো। কোথাও আবার লক্ষ্মীপুজোর পিছনে রয়েছে প্রচলিত মিথ। এভাবেই মালদার বামনগোলায় ধুমধাম করে শুরু মা লক্ষ্মীর আরাধনা। বামনগোলায় পূজিতা হন ১৮ হাতের মহালক্ষ্মী।মালদহ জেলার বামনগোলা ব্লকের গাঙ্গুরিয়া শ্রী শ্রী সারদা তীর্থম আশ্রমে পূজিতা হছে ১৮ হাতের কোজাগরী মহালক্ষ্মী ঠাকুর। এদিন সকালে১৬ রকম উপাচার দিয়ে মায়ের পুজো দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।সেই উপাচারে বস্ত্র,আলতা,কাজল,চিরুনি,ধুপচি সহ নানা কিছু দেওয়া থাকে।এছাড়াও ওই দিন মায়ের রাজকীয় ভোগে অন্ন, পাঁচ রকম ভাজা, তিন রকম তরকারি, ডাল, বিভিন্ন রকম মিষ্টি নিবেদন করা হয়। এদিন মহালক্ষ্মীর পুজোয় এক হাজার আটটি বেলপাতা দিয়ে বিরাট যজ্ঞ করা হয়।মায়ের আরতির অনুষ্ঠানও নিষ্ঠার সহিত করা হয়।পূজিতা মহালক্ষ্মীর এক হাতে থাকে ভগবান নারায়ণের সুদর্শন চক্র, বাকি সতেরোটি হাতে ত্রিশূল,গদা,তীর, ধনুক,কুঠার,বজ্র,জপের মালা,শঙ্খ,পদ্ম সহ অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে সুজজ্জিত থাকে।শুধু তাই নয়,একই আশ্রমে রাতে চিত্র পটের কোজাগরী রূপে মায়ের পুজো দেওয়া হয়।দেবী মাকে লুচি,সুজি,মিষ্টি নিবেদন করা হয়।পুজোতে গ্রামের মহিলারা উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন।তাঁদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়।মায়ের এই মহালক্ষ্মীর শক্তির রূপের দর্শন করতে অগণিত ভক্তরা ছুটে আসেন।প্যাঁচা নয়, মা লক্ষ্মীর বাহন হাতি! কেন এমন প্রচলন বাঁকুড়ার গ্রামের পুজোয়?
জেলা ভেদে জায়গা ভেদে লক্ষ্মীর ভিন্ন ভিন্ন রূপের পুজো হয়। বাঁকুড়ায় যেমন হয় গজলক্ষ্মীর পুজো। গজরাজের আক্রমণের হাত থেকে জমির ফসল বাঁচাতে গঙ্গাজলঘাটির জঙ্গল লাগোয়া রামকানালী গ্রামে ১২৫ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। এখানে লক্ষ্মীর সঙ্গে চিরাচরিত পেঁচা থাকলেও দেবী গজরাজ অর্থাৎ হাতির পিঠে উপবিষ্টা। ফসলকে গজরাজের হাত থেকে বাঁচাতে ১২৫ বছর আগে দেবী লক্ষ্মী ও হাতিকে একই সঙ্গে তুষ্ট করতে ‘গজ লক্ষ্মী’র আরাধনা একসঙ্গে শুরু হয়। এখানে দুর্গাপুজো হয় না। তাই দুর্গাপুজোর আনন্দ চুটিয়ে গ্রামের মানুষ করেন এই লক্ষ্মীপুজোয়। সিঁদুর খেলা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দুর্গাপুজোর মত সবই হয় এই পুজোতেই। কোজাগরী পূর্ণিমায় প্রতিবছর নির্দিষ্ট তিথিতে নব নব রূপে মা লক্ষ্মীর পুজো হয়। বছরে একবার আসা এই পুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠেন। আবার নতুন করে ৩৬৫ দিনের অপেক্ষা।
More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক