October 5, 2025

হোটেলে বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয় ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ‘বৈঠক’ কুণাল ঘোষের, তোলপাড় বাংলার রাজনীতি মহল

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: এক পলকের একটু দেখা নাকি রীতিমতো নির্ঘণ্ট মেনে উপস্থিতি তা নিয়ে তোলপাড় বাংলার রাজনৈতিক মহল। ছোট্ট একটা বৈঠক আর তাকে ঘিরেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে তুমুল আলোড়ন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বারুইপুরের রোল্যান্ড ইন হোটেলে একসঙ্গে দেখা যায় তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এবং বিজেপির দুই নেতা বাবুল সুপ্রিয় ও শুভেন্দু অধিকারীকে। বর্তমানে কুনাল ঘোষের সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে রয়েছেন বাবুল সুপ্রিয় ও শুভেন্দু অধিকারী। এমনকি এই দুই মেরুর তিন নেতা বিভিন্ন সভাতে  পরস্পরদের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমনাত্মক ভাষাতে বক্তব্য রাখছেন। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারী ও কুনাল ঘোষ একে অপরকে যেভাবে আক্রমণ করছেন তা বাংলার রাজনীতি নজিরবিহীন। কুনাল ঘোষের কাছে শুভেন্দু অধিকারী হলেন বাংলার মীরজাফর। শুভেন্দু অধিকারীও কুণাল ঘোষের পূর্ববর্তী কর্মকাণ্ড নিয়ে তাঁকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি। তাই সেই দু’জনের মধ্যে প্রায় ৪৫ মিনিট কথাবার্তা রাজ্য রাজনীতি আলোড়ন তোলার পক্ষে যথেষ্ট। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা বাবুল সুপ্রিয়। ফলে রাজনৈতিক রঙ লাগতে বাধ্য। যদিও উভয় পক্ষই জানিয়েছেন এটা একেবারে নিছক হঠাৎ দেখা, কাকতালীয়। আর দেখা যখন হয়েই গেছে তখন সৌজন্য সাক্ষাতে, আলোচনায় অসুবিধা কোথায়। এটাই তো বাংলার সংস্কৃতি। অন্য একটি সূত্রের খবর, এদিন ক্যানিং-এ সভা করে ফিরছিলেন কুনাল ঘোষ। অন্যদিকে কুলতলি থেকে পরিবর্তন যাত্রা শেষে ফিরছিলেন বাবুল সুপ্রিয় ও শুভেন্দু অধিকারী। তখনই ওই হোটেলে উভয় পক্ষই হাজির হয়েছিলেন। তবে অনেকেই দাবি করেছেন বাবুল সুপ্রিয় এক ঘন্টা আগে কুলতলি থেকে বের হয়েছিলেন। তাহলে তিনি কীভাবে ওই সময় সেখানে উপস্থিত হলেন। এটা কি ঘটনাচক্রে দেখা হওয়া নাকি সত্যিই  হাজির হওয়া। তবে আসল ঘটনা যাই হোক না কেন, এই কথা জানাজানির পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই এই তিন জনের কাছেই মুহুর্মুহু ফোনের বন্যা বয়ে যায়। কেন দেখা, আসলে ঘটনাটা কি  তারা সকলেই জানতে চান। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ এর সঙ্গে এদিন অভিষেক ব্যানার্জীর বাড়িতে সিবিআইয়ের যাওয়ার সঙ্গে সংযোগ থাকতে পারে। কারণ শুভেন্দু অধিকারী বারবার দাবি করছেন, তাঁর কাছে সমস্ত কিছু নথিপত্র রয়েছে। বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে গরু পাচার চক্র সবেরই নাকি প্রমাণ তাঁর হাতে রয়েছে। তাই অনেকেই এই সাক্ষাতের সঙ্গে সিবিআইয়ের হানার যোগসুত্র দেখছেন। এর পিছনে আবার কেউ কেউ কুনাল ঘোষ বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যদিও কুনাল ঘোষ রীতিমতো নিজের ফেসবুক ওয়ালে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন এটা নেহাতই কাকতালীয়ভাবে দেখা। আর বাংলার সংস্কৃতি অনুযায়ী তাঁরা সেখানে সৌজন্য বিনিময় করেছেন মাত্র। তিনি তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন— ‘এত জল্পনা, এত ফোন। দু একটি কথা।মঙ্গলবার ক্যানিংয়ে তৃণমূলের পদযাত্রা এবং জনসভা করে ফিরছিলাম।
বারুইপুরের কাছাকাছি পথের ধারের একটি রেস্তোরায় সহকর্মীদের নিয়ে দাঁড়াই। টি ব্রেক। শুনলাম একটু আগেই ওখান থেকে গেছেন বিশিষ্ট এক তৃণমূল নেতা।এর কিছুক্ষণ পর অন্য একটি জায়গায় সভা সেরে ফেরার পথে ওই রেস্তোরায় ঢোকেন বিজেপির দুই নেতা। পুরনো পরিচিত। আলাদা দলে থাকলেও এইসব ক্ষেত্রে সৌজন্য ছাড়া নিশ্চয়ই প্রকাশ্য ঝগড়া হতে পারে না।দেখা হয়েছে। সৌজন্যের কথা হয়েছে।ঐটুকুই। এর মধ্যে কোনো পরিকল্পিত বৈঠকের গল্প বা রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই।তাঁরা বিজেপি। আমি তৃণমূল।কারুর গোপন বৈঠক করার থাকলে সে নিশ্চয় দলীয় সভা থেকে ফেরার সময় সর্বসমক্ষে প্রকাশ্য রেস্তোরায় সেটা করবে না !!😄😄
ফলে যাঁরা এ নিয়ে প্রবল চিন্তিত, তাঁরা আপাতত ঘুমিয়ে পড়তে পারেন।😴😴😴😴😴

বিয়ে বাড়ি গিয়েছিলাম বলে পোস্ট করতে দেরি হল।’
তবে কুনাল ঘোষ বা বিজেপি নেতারা যাই বলুন না কেন, এই ঘটনা যে  রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এটা যদি হঠাৎ দেখা হয় তাহলে হয়তো এটা সাময়িক আলোড়ন তুলেই শান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু এর পিছনে যদি অন্য কোন রহস্য থাকে তাহলে তার ফল হবে সুদূর প্রসারী। আগামী দিনেই এর উত্তর মিলবে।  তাই সাধারণ কৌতুহলী মানুষদের এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।

Loading