সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: জোট নিয়ে শুরুতেই হোঁচট। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিশাল জনসমুদ্রের সামনে প্রকাশ্য মঞ্চেই বাম-কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। রবিবার এই মহাসমাবেশে জোট নেতাদের যে আগোছালো চেহারা উপস্থিত মানুষজন এবং সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে সারা রাজ্যজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখলেন তাতে এই জোটের ওপর আগামী দিনে তাঁরা কতটা আস্থা রাখবেন তা বলা কঠিন। এখন থেকেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ফলাফল ঘোষণার পর যদি কোনভাবে ক্ষমতার কাছাকাছি এই জোট পৌঁছে যায় তখন এদের কি অবস্থা হবে তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট এবার অনেক আগে ভাগেই সুন্দরভাবে তৈরী হয়ে গিয়েছিল। তারপরই এই জোটে প্রবেশ পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের। আর তারপর থেকেই এই জোট নিয়ে তৈরি হয়েছে জট। বামেরা আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে যতটা উদারতা দেখাচ্ছে, কংগ্রেসের ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে না। তার কারণ কংগ্রেসের দাবি, উত্তরবঙ্গের যে সমস্ত আসন আব্বাস সিদ্দিকী দাবি করছেন তার বেশিরভাগই কংগ্রেসের নিশ্চিত আসন। তাই সেইসব আসন আব্বাস সিদ্দিকীকে ছাড়া সম্ভব নয়। অথচ বাংলায় অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে কংগ্রেসের কাছে এই জোট অত্যন্ত প্রয়োজন। দিল্লির কংগ্রেস হাইকমান্ড অন্তত বুঝেছেন। তাই তাঁরা চান, তারা চান যেন-তেন প্রকারেণ বাম-কংগ্রেস জোটে আব্বাস সিদ্দিকীকে সামিল করতে। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা কেন্দ্রের নেতাদের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না। আর তার জেরেই জোট এখন ঘোঁট পাকাতে শুরু করেছে। এদিন ব্রিগেড সমাবেশে আব্বাস সিদ্দিকী মঞ্চে ওঠার সময় বক্তব্য রাখছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। আব্বাস সিদ্দিকী মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সামনে উপস্থিত জনতা আনন্দে আত্মহারা হয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। বক্তব্য থামাতে বাধ্য হন অধীর চৌধুরী। ওই সময় সিপিএম নেতারা চেয়েছিলেন আব্বাস সিদ্দিকীকে অল্প কিছু কথা বলতে দেওয়ার জন্য। সে কথা জানাতেই অধীর চৌধুরী তীব্র ক্ষুব্ধ হন। তিনি জানিয়ে দেন, তাহলে তিনি আর বক্তব্য রাখবেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ড্যামেজ কন্ট্রোল করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি একরকম ধরাধরি করে অধীর চৌধুরীকে পুনরায় বক্তব্য শুরু করতে রাজি করান। কিন্তু টিভি চ্যানেল ও ইন্টারনেট মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার চলায় তাঁদের জোটের এই ছন্নছাড়া চেহারা লক্ষ লক্ষ মানুষ সরাসরি প্রত্যক্ষ করলেন। এমনকি অধীর চৌধুরীর পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আব্বাস সিদ্দিকীও কোন রাখঢাক না করেই পরিষ্কার জানিয়ে দেন বামের পাশে থাকার কথা। অনুগামীদেরও তা জানিয়ে দেন। কিন্তু কংগ্রেসের পাশে থাকার কথা এখনই জানাতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন। কারণ কংগ্রেসের সঙ্গে জোট এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যদি জোট হয় তাহলে তিনি পরে কর্মীদের তা জানাবেন। স্বভাবতই প্রকাশ্য মঞ্চে কংগ্রেসের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকীর দলের এই দড়ি টানাটানি এই জোটের ভবিষ্যত নিয়ে এখনই প্রশ্ন তুলে দিয়ে চলে গেল।।
More Stories
জয়রামবাটিতে স্টেশনের উদ্বোধন ১১ ডিসেম্বর করার দাবি : কামারপুকুর রেল চাই পক্ষের আবেদন
দার্জিলিংয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ধসে মৃত ১৩, নিখোঁজ ১
কালীঘাটে বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা–অভিষেক