October 5, 2025

ফলন কম, ফাটা আলু, বাজারে দাম নেই, মাথায় হাত পুরশুড়ার আলুচাষিদের

সোমালিয়া সংবাদ, পুরশুড়া: সারা বছর আলু চাষের দিকে তাকিয়ে থাকেন পুরশুড়ার মানুষ। অথচ এবার মাঠ থেকে আলু  তুলতে গিয়ে মাথায় হাত তাঁদের। এমনিতেই ফলন  কম হয়েছে। আবার যেটুকু ফলন হয়েছে সেই আলুর বেশিরভাগ ফাটা ও পচা। অন্যদিকে বাজারে আলুর দামও কম। সব মিলিয়ে দিশেহারা অবস্থা এলাকার চাষিদের। তাঁদের অভিযোগ, পাঞ্জাবের উন্নত মানের আলুবীজ কিনেও তাঁরা ঠকে গেছেন। তাই এখন সরকার যদি বাইরে আলু রপ্তানির ব্যবস্থা করে তবেই একমাত্র তাঁরা খরচ তুলতে পারবেন। নাহলে ঋণের দায়ে সবকিছু বিকিয়ে যাবে। পুরশুড়ার জঙ্গলপাড়ার বাসিন্দা সুনীল সামন্ত দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। গতবারও ওই জমি থেকে আলু বিক্রি করে ভাল লাভ পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার অর্ধেক খরচটুকুও ওঠেনি। তিনি জানালেন, বিঘাতে ৬০ প্যাকেট (১ প্যাকেট ৫০ কেজি) আলু হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অর্ধেক। আর দাম নেমে গেছে একেবারে তলানিতে। ৫০ কেজি আলুর দাম ২৫০-২৭০ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ টাকা কেজি হিসেবে তাঁরা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁরা জানালেন এই বাজারে যদি এক প্যাকেট আলু  ৭৫০ টাকায় বিক্রি করতে পারেন তবে খরচটুকু উঠবে। লাভ তো দূরের কথা। একই কথা জানালেন কৃষ্ণবাটি গ্রামের রাজীব মন্ডল ও রসুলপুর গ্রামের মোহন মন্ডল। তাঁরা জানালেন,  বীজের সমস্যা ছিল। যার জন্য এত আলু ফেটে গেছে। ফলনও কমেছে। কারণ পরিমাণ মতো জল এবং সার সবকিছুই দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও এই ফলন তাঁরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। রণবাগপুর গ্রামের সনাতন দোলুইয়ের তিন বিঘা জমির প্রায় সমস্ত আলুই ফাটা। ব্লকের অন্যান্য চাষিদের মত তাঁদেরও মাথায় হাত। তাঁর আবেদন, রাজ্য সরকার এখনই বাইরে আলু রপ্তানির ব্যবস্থা করুক। তাহলে হয়তো আলুর দাম কিছুটা বাড়বে। তাঁরা অন্তত খরচটুকু তুলতে পারবেন। পাশাপাশি এইসব চাষিরা আগামী বছর থেকে এরাজ্যেই উন্নতমানের আলু বীজের ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন। কারণ বাইরে থেকে আলু বীজ কিনতে গিয়ে একদিকে যেমন চড়া দাম দিতে হচ্ছে, তেমনি মাঝে মাঝেই তাঁদেরকে ঠকতে হচ্ছে। একমাত্র রাজ্য সরকার যদি এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয় তাহলেই তাঁরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। 

Loading