October 5, 2025

সুগন্ধী ধান চাষে নতুন দিশা দেখাচ্ছে সুন্দরবন, ২৫০ টাকা মিলেছে সুগন্ধি চাল!

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ : সুন্দরবনের কৃষকদের কাছে একটা নতুন দিশা দেখাচ্ছে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাকে হারিয়ে অর্গ‌ানিক সুগন্ধী চাল ফলানো। যা আড়াইশো টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে! এই অসাধ‌্যসাধন করেছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বায়োডাইভার্সিটি বোর্ড’। সলতে পাকানো শুরু ২০১৯ সাল থেকে। পরীক্ষামূলকভাবে দুই থেকে তিন বিঘে জমিতে শুরু হয় নোনা সহনশীল ধানের জৈব চাষ। সাফল্য আসতে জমির পরিমাণ বাড়তে থাকে। এ বছর ৮ হেক্টর জমিতে অর্গানিক ধানের চাষ হয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলি চাল সুগন্ধী। বেগুনি, লালচে, কালো সেই সব চাল ভালো দাম পেয়েছে। জানা গিয়েছে, কেজি প্রতি ১১০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা মিলেছে। তাতেই চওড়া হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। এখনও পর্যন্ত গোসাবার টিটলিঘেরা, শান্তিগাছি ও কুলতলির মইপীঠ গ্রামে অর্গানিক চাষ হয়েছে। এবার গোসাবা-কুলতলির অন‌্য গ্রামগুলিও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ’ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বায়োডাইভার্সিটি বোর্ড’-এর চেয়ারম‌্যান ড. হিমাদ্রিশেখর দেবনাথ জানিয়েছেন, সুন্দরবনে অর্গানিক ধান চাষ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফল হয়েছে। গোসাবার মন্মথনগর সিড ফার্ম থেকে চাষিরা বীজ নিয়ে গিয়ে ধান চাষ করছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলে ভালোই ফলন দিচ্ছে গোবিন্দভোগ। অর্গানিক চাষের পরিধি বাড়ছে। আসলে রাজ্য সরকার এই চাষের ব‌্যাপারে খরচ-খরচা করলেও উৎপাদিত ধান বিক্রির ৭০ শতাংশ দামই যাচ্ছে চাষির কাছে। বাকি টাকা গচ্ছিত হচ্ছে ‘সিড ব‌্যাঙ্ক’-এর উন্নয়নে। জানা গিয়েছে, পরবর্তীকালে চাষিদের সমবায় গড়ে উঠলে গচ্ছিত এই অর্থ ‘স্টার্টিং ক‌্যাপিটাল’ হিসাবে দেওয়া হবে। দীর্ঘদিন ধরে চুঁচুড়ার ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে নোনা সহনশীল ধান নিয়ে গবেষণা চলছে। মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের নির্দেশে কৃষিবিজ্ঞানীরা নোনা স্বর্ণ ধান তৈরি করেছে। যা নতুন দিশা দেখিয়েছে সুন্দরবনের মানুষকে। এবার স্বপ্ন দেখাচ্ছে সুগন্ধী চাল। জানা গিয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ২৮ রকমের ধান ফলানো হয়েছে সুন্দরবনে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মরিশাল, মেঘনা, মাছকন্যা, বিরহী, কলাবতী, খণ্ডগিরি, লাল জোয়ারি, দোপানা, তুলাইপাঞ্জি, খেজুর ছড়ি, হরিণ খুরি, নাগেশ্বরী, তুলসীমুকুল, নরসিংহ ইত্যাদি। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৬৫ কেজি সুগন্ধী চাল বিক্রি হয়েছে। এখনও ৩ কুইন্টাল ধান পড়ে রয়েছে। এমনটাই জানালেন ‘সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট’-এর কর্ণধার দীপায়ন দে। তাঁর দাবি, ”কোনও রাসায়নিক সার ছাড়াই এই ধান ফলেছে। আমরা চাষিদের জমি তৈরি থেকে ধান চাষ, চাল বের করা থেকে চালের বিপণন সবেতেই পাশে দাঁড়িয়েছি। অর্থনৈতিক দিক থেকে সুন্দরবনকে উন্নতি ও নতুন দিশার দেখাবে আশাবাদী মানুষ।

Loading