সোমালিয়া সংবাদ, গোঘাট: স্বাধীনতার পর ৭৭ বছর কেটে গেছে। ভারতের পার্লামেন্টে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিনিধিরা নিজের এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তুলে ধরেছেন এলাকার নানান সমস্যা এবং সেই সমস্যার সমাধান কিভাবে করা যায় তার পরিকল্পনার কথা। ১৯৬৭ সালে আরামবাগ লোকসভা গঠন হওয়ার পর আরামবাগের মানুষও তাঁদের এক প্রতিনিধির মাধ্যমে দিল্লির দরবারে এলাকার সমস্যা নিয়ে সরব হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। আরামবাগ লোকসভায় প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন অমিয়নাথ বসু। তিনি ছিলেন ফরোয়ার্ড ব্লক দলের প্রতিষ্ঠাতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভাইপো তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী শরৎচন্দ্র বসুর পুত্র। আরামবাগের মানুষ তাঁদের প্রথম সাংসদ হিসেবে এরকম এক বিখ্যাত পরিবারের সন্তানকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সিপিআইএমের মনোরঞ্জন হাজরা। ১৯৭৭ সালে ভারতীয় লোকদল থেকে দাঁড়িয়ে এই আসনটিতে জয়ী হন প্রফুল্ল চন্দ্র সেন। তবে ১৯৮০ সালে সিপিআইএম বিজয়কৃষ্ণ মোদকের মাধ্যমে এই আসন পুনরায় তাদের নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয়। এরপর অবশ্য আরামবাগ জুড়ে শুধুমাত্র লাল পতাকার ছড়াছড়ি। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই আসনটি ছিল সিপিআইএমের দখলে। তার মধ্যে অনিল বসু ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই লোকসভার সাংসদ ছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি রেকর্ড মার্জিনে জয়লাভ করে সারা দেশজুড়ে সোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে সিপিআইএম থেকে সাংসদ হন শক্তিমোহন মালিক। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে বাংলায় গঠিত হয় মা-মাটি-মানুষের তৃণমূল সরকার। আর তারপরেই আরামবাগ লোকসভা আসন চলে যায় তৃণমূলের দখলে। ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এই আসন তৃণমূলের দখলে। পরপর দু’বার এই আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের অপরূপা পোদ্দার। এবার এই আসন দখলের লড়াইয়ে মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন তৃণমূলের মিতালি বাগ এবং বিজেপির অরূপকান্তি দিগার। আরামবাগ লোকসভা গঠনের পর দীর্ঘ ৫৭ বছরে গোঘাট থেকে কেউ এই আসনে নির্বাচিত হননি। অর্থাৎ গোঘাট থেকে কোন সাংসদ এখনও পর্যন্ত দিল্লির পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি। খুব বড় কোন অঘটন না ঘটলে এবার গোঘাটবাসী নিশ্চিত তাঁদের বিধানসভা এলাকা থেকেই একজন দিল্লির পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করবেন। কারণ দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের মিতালি বাগ এবং বিজেপির অরূপকান্তি দিগারের মধ্যে কেউ একজন জয়ী হবেন। অর্থাৎ দীর্ঘ ৫৭ বছর পর আরামবাগ লোকসভার মানুষের হয়ে কথা বলবেন গোঘাটের একজন প্রতিনিধি। তাই গোঘাটের মানুষ এ বিষয়ে এখন গর্ব করতেই পারেন।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি