সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ: নির্বাচনে শাসক শিবির জয় লাভ করার পর বিরোধীদের উপর আক্রমণের অভিযোগ এ রাজ্যে একটা সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যে যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তাদের বিরুদ্ধে বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা সেই অভিযোগ তুলে এসেছেন। কংগ্রেস-বাম জমানার পর তৃণমূল জমানাতেও সেই একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি এই অভিযোগও একইসঙ্গে দেখা যায় যে বিরোধী দলের আক্রান্ত নেতাকর্মীদের পাশে সেই দলের নেতাদেরকেই দেখা যায় না। তাঁদের বিপদের দিনে অনেকেই নেতৃত্বের উপস্থিতি ও সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হন। ফলে দলের জন্য লড়াই করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর বাকি লড়াইটা নিজেদেরকেই লড়তে হয়। তা থেকে জন্মায় ক্ষোভ, হতাশা এবং দলীয় নেতৃত্বের একাংশের প্রতি বিতৃষ্ণা। গত বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এ রাজ্যে আক্রান্ত অনেক বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সেই অভিজ্ঞতা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বিজেপির আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের পাশে তেমনভাবে ছুটে যেতে দেখা যায়নি স্থানীয় নেতৃত্বকে। এমনকি আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা থেকেও বিক্ষিপ্তভাবে সেরকম অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে ছবিটা সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। তৃণমূলের কাছে আরামবাগ আসনে পরাজিত হওয়ার পর আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিজেপি কর্মীকে মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগ আসছে। তবে সেই অভিযোগ পাওয়ার পর বিজেপি নেতৃত্ব এবার আর চুপ করে বসে নেই। সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্তের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন। এক্ষেত্রে বিজেপির জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক বিমান ঘোষ সহ বাকি তিন বিধায়ক মধুসূদন বাগ, সুশান্ত ঘোষ ও বিশ্বনাথ কারক, এমনকি দলের অন্যান্য মন্ডল সভাপতি এবং কার্যকর্তাদেরকেও আক্রান্তের বাড়িতে ছুটে যেতে দেখা যাচ্ছে। হাসপাতালে গিয়ে কথা বলছেন আক্রান্তের পরিবারের সঙ্গে। তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন, আইনি সহায়তা দিচ্ছেন। বিজেপি জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বন্ধ করে দেওয়া দোকান খোলার ব্যবস্থা করছেন। শাসক দলের হুমকির মুখে বাইরে বের হতে না পারা কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। অন্য তিন বিধায়ক ও কার্যকর্তারাও একইভাবে গ্রামে গ্রামে গিয়ে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এত সক্রিয়ভাবে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে এর আগে বিজেপি নেতাদেরকে খুব কমই দেখা গেছে। এবার যেন সেই সক্রিয়তা অনেকটাই বেশি। স্বাভাবিকভাবেই দলের নেতাদেরকে কাছে পেয়ে, পাশে পেয়ে খুশি আক্রান্ত ও তাঁদের পরিবারেরাও। দলের জন্য লড়াই করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর তাই তাঁদের কোন ক্ষোভ নেই। দলের জন্য আবার তাঁরা লড়াইয়ে নামার শপথ নিচ্ছেন। যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে একটা বাড়তি পাওনা কোন সন্দেহ নেই।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি