October 6, 2025

গোঘাটের যুবকের বাড়িতে স্নানাগার তৈরি করে দেবেন অমিতাভ বচ্চন

সোমালিয়া সংবাদ, গোঘাট: কেবিসি-র হটসিটে বসে বিগ বি অমিতাভ বচ্চনের কাছে নিজের পরিবারের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছিলেন গোঘাটের আগাই গ্রামের যুবক জয়ন্ত দুলে। তা শুনেই জয়ন্তর বাড়িতে নিজের খরচে একটি স্নানাগার তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন। এমনটাই জানালেন জয়ন্ত। আর এই ঘটনায় একেবারে আপ্লুত ও অভিভূত জয়ন্ত ও তাঁর পরিবার পরিজনেরা। জয়ন্তদের আর্থিক অবস্থা খুবই দুর্বল। তাঁদের মাটির বাড়ি। বাবা একটি মুদির দোকানে কাজ করে তাঁকে ও তাঁর বোনকে পড়াশোনা করিয়েছেন। মা সাধারণ গৃহবধূ। জয়ন্ত যাদবপুর থেকে এডুকেশনে মাস্টার ডিগ্রী করেছেন। বর্তমানে অনলাইনে পড়ান। জয়ন্ত জানান, টিভি দেখার সময় ‘কোন্ বনেগা ক্রোড়পতি’ দেখতে দেখতে নিজেই উত্তর দিতেন। তখনই বাবা ভাদু দুলে তাঁকে উৎসাহিত করতেন, খোকা তুইও পারবি। বাবার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে তারপর থেকেই নিজেকে একটু একটু করে তৈরি করতে থাকেন জয়ন্ত। স্বপ্ন দেখতে থাকেন অমিতাভ বচ্চনের মুখোমুখি হবার। ২০১৬ সাল থেকে সেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। আর বাকিটা অনেকটা রূপকথার মতো। এ বছর মার্চ মাস থেকে তাঁর সেই স্বপ্ন একটু একটু করে বাস্তবে রূপ নিতে থাকে। প্রথমে দিল্লিতে গ্রাউন্ড অডিশনে পাশ করে মূল পর্বে পৌঁছে যান। তারপর একেবারে অমিতাভ বচ্চনের মুখোমুখি হয়ে একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার পুরস্কার জিতে নেন। সেই সঙ্গে গোল্ড কয়েন সহ অসংখ্য গিফট কুপন। জয়ন্ত বলেন, তখনই অমিতাভ বচ্চনকে জানিয়েছিলাম, আমাদের গ্রামের কথা, আমাদের পরিবারের দুর্দশার কথা। সরকার থেকে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হলেও স্নানাগারের অভাবে পুকুরের জলে মা এবং বোনকে স্নান করতে হয়। যেটা আমার কাছে খুবই লজ্জার মনে হয়। তাছাড়া ওই পুকুরেতেই গরু এবং অন্যান্য পশুদেরকেও স্নান করানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই রোগ জ্বালা লেগেই থাকে। জয়ন্ত জানান, এ কথা শুনেই অমিতাভ বচ্চন আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তখনই তিনি বলেন, ‘তুমি কোন পুরস্কার জেতো বা না জেতো, তোমার বাড়িতে একটি স্নানাগার আমি তৈরি করে দেব। তার সম্পূর্ণ খরচ আমার’। তারপর একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জয়ন্ত সাড়ে ১২ লাখ টাকার পুরস্কার জিতে নেন। কিন্তু অমিতাভ বচ্চন তাঁকে জানিয়েছেন, তিন মাসের তিনি তাঁর বাড়িতে এটি স্নানাগার তৈরি করে দেবেন এবং তার প্রস্তুতিও নিতে বলেছেন। আর এতেই একেবারে অভিভূত হয়ে পড়েছেন জয়ন্ত। তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল তাঁর মুখোমুখি হাজির হবার। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আর তার ওপর তিনি আমাদের বাড়ির জন্য স্নানাগার তৈরি করে দেবেন এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। আমি এর জন্য তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। জয়ন্তর বাবা ভাদু দুলে অমিতাভ বচ্চনের নাম শুনেই তাঁর উদ্দেশ্যে প্রণাম জানালেন। বললেন, ওনার মতো মানুষ হয় না। উনি যে আমাদের কথা ভেবে এই প্রস্তাব দিয়েছেন ভাবতেই পারছি না। ওনার কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ।

Loading