সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: ভারতের ভবিষ্যৎ যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় শুরু হলো। ৪১০ মিটার দীর্ঘ হাইপারলুপ পরীক্ষামূলক ট্র্যাক নির্মাণ শেষ হয়েছে। এই যুগান্তকারী প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হয়েছে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে, IIT-মাদ্রাজের আবিষ্কারক হাইপারলুপ টিম’ এবং TuTr (IIT-M ইনকিউবেটেড স্টার্টআপ)-এর যৌথ প্রচেষ্টায়।
অবস্থান:
এই হাইপারলুপ পরীক্ষামূলক ট্র্যাকটি নির্মিত হয়েছে IIT-মাদ্রাজের ডিসকভারি ক্যাম্পাস, থাইয়ুরে।
হাইপারলুপ কি?
হাইপারলুপ হল ভবিষ্যৎ উচ্চগতির পরিবহন ব্যবস্থা, যেখানে পড বা ক্যাপসুলগুলো অত্যন্ত কম বায়ুরোধী টিউবের মধ্যে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে চলে। এটি ঘণ্টায় ১০০০ কিমি বা তারও বেশি গতিতে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করতে সক্ষম।
হাইপারলুপ ট্রেন কোন্ পদ্ধতিতে চলে?
‘হাইপারলুপ’ ট্রেন চালানোর সব থেকে আধুনিক প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয় কাচের আংশিক বায়ুশূন্য একটি দীর্ঘ টানেল। সেই টানেলের মধ্যে দিয়ে ছোটে একটি ক্যাঙ্গুল। অনেকটা শপিংমলগুলোর ক্যাপসুল লিফটের মতো। তবে পার্থক্য হলো এসব ক্যাপসুল আপনাকে নিয়ে যায় ওপরে বা নিচে আর হাইপারলুপ আপনাকে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নিয়ে যাবে গন্তব্যে।ক্যাঙ্গুলের মধ্যে বিমানের মতো কৃত্রিম ভাবে বায়ুচাপ তৈরি করা হয়। ফলে যাত্রীদের শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কোনও সমস্যা হয় না। ওদিকে টানেল বায়ুশূন্য হওয়ায় কার্যত কোনও বাধা ছাড়াই খুব সামান্য শক্তি খরচ করে প্রচণ্ড বেগে ছুটতে পারে ক্যাঙ্গুলটি।আংশিক বায়ুশূন্যতা জন্য প্রায় কোনো ঘর্ষণ থাকবে না। আরোহীরা শুধুমাত্র একটি গাড়িতে চলাফেরা করার সমান অভিকর্ষজ ত্বরণ অভিজ্ঞতা করবে। দেখলে মনে হবে বাতাসের ওপর ভেসে চলেছে। হাইপারলুপ ট্রেনগুলো নিজেদের দুর্ধর্ষ গতি থেকে সৃষ্টি করা এয়ার কুশনের ওপর ভেসে থাকবে।
কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?
স্বল্প সময়ে ভ্রমণ: এটি যোগাযোগ ব্যবস্থার গতিকে এক নতুন মাত্রা দেবে।
ভারতের প্রযুক্তি উন্নয়ন: দেশীয় উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় মাইলফলক।
সবুজ পরিবহন: হাইপারলুপ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করবে।
IIT-মাদ্রাজের ডিসকভারি ক্যাম্পাসে এই পরীক্ষামূলক প্রকল্প সফল হলে, ভবিষ্যতে ভারতের বিভিন্ন শহরের মধ্যে সুপারফাস্ট সংযোগ তৈরির পথ সুগম হবে।
স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে চলেছে ভারত!
এই অভূতপূর্ব পদক্ষেপে অংশগ্রহণকারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করা যায়, আগামী বছরগুলিতে ভারত হাইপারলুপ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে।
ভবিষ্যতে ভারতে কিছু প্রকল্প চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছে যেগুলি নিচে দেওয়া হল..
১. ওই ট্রেনে বেঙ্গালুরু থেকে চেন্নাই ৩৩৪ কিলোমিটার পথ পেরতে সময় লাগবে ২০ মিনিট।
২. বেঙ্গালুরু থেকে তিরঅনন্তপুরম ৭৩৬ কিলোমিটার পথ পেরতে সময় লাগবে ৪১ মিনিট।
৩. জয়পুর, ইনদওর হয়ে দিল্লি থেকে মুম্বই ১ হাজার ৩১৭ কিলোমিটার পথ পেরতে সময় লাগবে ৫৫ মিনিট।
৪. বেঙ্গালুরু হয়ে মুম্বই থেকে চেন্নাই ১ হাজার ১০২ কিলোমিটার পথ পেরতে সময় লাগবে ৫০ মিনিট।
৫. বেঙ্গালুরু থেকে চেন্নাই ৩৩৪ কিলোমিটার পথ পেরতে সময় লাগবে ২০ মিনিট।
পুণে থেকে মুম্বাইয়ের হাইপারলুপ প্রকল্পের খরচ-
মহারাষ্ট্রের পুণে থেকে মুম্বাই পর্যন্ত হাইপারলুপ ট্রেন চালানোর জন্য আনুমানিক খরচ ধার্য করা হয়েছে ৫৫ বিলিয়ন আমেরিকা ডলারে এবং ভারতীয় টাকায় যেটা হয় ৩,৫০,০০০ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কটা দেখতে একটু বেশি লাগলেও এর আর্থ-সামাজিক কিছু সুবিধা রয়েছে, যার ফলে এর প্রাথমিক খরচ বেশি হলেও পরবর্তী খরচ অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থার থেকে অনেক কম হবে জানিয়েছে ‘ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান’ সংস্থা।
![]()

More Stories
রহস্যময় গাছ! রাতের অন্ধকারেই জ্বলে উঠবে আলো!
বেন বেন পিরামিড
সয়াবিন তেলে ‘হেক্সেন’ আতঙ্ক: পেটের অসুখের মূলেই কি রান্নার তেল?