সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রাগৈতিহাসিক গল্পে ভিখু ও পাঁচী একই জায়গায় ভিক্ষা করলেও পাঁচীর পায়ে থকথকে তৈলাক্ত ঘা থাকায় সে টাকা বেশি রোজগার করে।
ভিখু পাঁচীকে বলে, ‘ঘা-টি সারব না, লয়?’
পাঁচী বলে, ‘খুব! ওষুদ দিলে অখনি সারে।
ভিখু সাগ্রহে বলে, ‘সারা তবে, ওষুদ দিয়ে চটপট সারাইয়া ল। ঘা সারলে তোর আর ভিক্ মাগতি অইবো না
পাঁচীর টাকা ও শরীরের ওপর ভিখুর নজর পড়লে সে পাঁচীর সাথে সখ্যতা তৈরি করে এবং বলে ’খাওয়ামু পরামু, আরামে রাখুম, পায়ের পরনি পা দিয়া গাঁট হইয়া বইয়া থাকবি। না করস তুই কিয়ের লেগে?’
তখন পাঁচী তামাকপাতা মুখে গুঁজিয়া সে বলে, ’দুদিন বাদে মোরে যখন তুই খেদাইয়া দিবি, ঘা মুই তখন পামু কোয়ানে?’
ছাত্র অবস্থায় পড়া এই গল্পে পাঁচীর কথাটা আজও মনে আছে। মানুষ ঘা নিয়েই থাকতে চায়।
ঘায়ের মধ্যেই হয়তো সকল স্বার্থ লুকাইয়া থাকে।
একজন বিচারক চাইলে দ্রুত বিচার কাজ করতে পারে কিন্তু ঘা টিকিয়ে রাখে।
একজন মিমাংসাকারী দ্রুত মিমাংসা করে দিতে পারে কিন্তু ঘা জমিয়ে রাখে।
একজন কোচিং শিক্ষক চাইলে দ্রুত সাবজেক্ট সমাধান করতে পারে কিন্তু ঘা জাগিয়ে রাখে।
একজন অফিসার দ্রুত ফাইলটি ছেড়ে দিতে পারে, কাজটি সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারে কিন্তু ঘা দিয়ে অযুহাত তৈরি করে।
সব ক্ষেত্রেই ঘা এর প্রাধান্য।
ঘা না থাকলে যেন সবাই অসহায়। দুর্নীতি ঘা এর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে।
তাই সবাই পাঁচীর মত সমস্বরে একসাথে বলে ”ঘা না থাকিলে মুই তখন পামু কোয়ানে?”
More Stories
১৩ হাজার ডলারের বিনিময়ে কেনা এক টুকরো বিরানভূমি, যা পরিণত হলো প্রকৃতির স্বর্গে
কেন ব্যবহার করা হয় “ঘট” হিন্দু পূজায়?
মা দুর্গার মুখে উর্ণনাভ: মহামায়ার চিহ্ন