সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ আজ, ২৪শে মে, বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন। ১৮৯৯ সালের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আজ তাঁর ১২৬তম জন্মবার্ষিকী।
কবিতা, গান, প্রবন্ধ, নাটক ও উপন্যাসের মাধ্যমে নজরুল বাংলা সাহিত্যকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছিলেন। দেশপ্রেম, সাম্যবাদ, বিদ্রোহ ও মানবতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর লেখনীতে। “বিদ্রোহী”, “অগ্নিবীণা”, “ভাঙ্গার গান”, “সাম্যবাদী” প্রভৃতি কবিতায় তাঁর বিপ্লবী চেতনার ছাপ স্পষ্ট।
নজরুল শুধু বিদ্রোহের কবিই নন, প্রেম, মানবতা এবং সুরের কবিও। তাঁর রচিত হাজারো গান—বিশেষত নজরুলগীতি—আজও বাঙালির মননে সমান প্রাসঙ্গিক। হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে তাঁর অবস্থান ছিল অনন্য।যদিও নজরুল ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ ও সাম্যবাদী চিন্তার অধিকারী, তবুও তিনি হিন্দু ধর্মীয় সংগীত, বিশেষ করে শ্যামাসঙ্গীত বা কালীভক্তি বিষয়ক গান অসাধারণ দক্ষতায় লিখেছেন।
আজ কবির জন্মদিন উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক স্তরে কবিকে স্মরণ করে সংগীতানুষ্ঠান, আলোচনাসভা ও কবিতাপাঠের আয়োজন করা হয়েছে।
জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছে সেই কবিকে, যিনি কলম হাতে তুলে নিয়ে নিপীড়নের বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে গিয়েছিলেন আজীবন। তাঁর চেতনা, তাঁর লেখা, আজও আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়—অন্ধকারের বিপরীতে দীপ্ত এক দীপশিখা হয়ে।
নজরুলের কিছু বিখ্যাত শ্যামাসঙ্গীত:
- “আমি যেথায় থাকি রাধা শ্যামা সেথায়”
- “মোর ভাবনারে কহিলে কি তা রবে”
- “কী দিয়ে ভরবো আমি শূন্য এ হৃদয়”
- “জগৎ মা তুমি আমার”
- “কেন বারে বারে বিষণ্ণ করো মা”
নজরুলের শ্যামাসঙ্গীত আজও পূজামণ্ডপ, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও ভক্তিমূলক পরিবেশনায় সমান জনপ্রিয়। তাঁর এই সৃষ্টি প্রমাণ করে তিনি ধর্ম বা গোষ্ঠীভেদে নয়, মানবতার, ভক্তির ও সৃজনশীলতার কবি।

More Stories
বিহার নির্বাচনে কংগ্রেসের তিন পর্যবেক্ষক ঘোষিত
মহালয়ার ভোরে রেডিও শোনার ঐতিহ্য ও বর্তমান বাস্তবতা
BRICS দেশগুলোর সঙ্গে ১০০% রুপিতে বাণিজ্যের প্রসঙ্গ