সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব (Impeachment Proposal) হলো সাংবিধানিকভাবে কোনো উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক—বিশেষ করে বিচারপতি, রাষ্ট্রপতি ইত্যাদি—কে অপসারণ করার জন্য সংসদে আনা একটি প্রক্রিয়াগত প্রস্তাব। এটি সাধারণত তখনই আনা হয়, যখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ যেমন দুর্নীতি, দুরাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার বা নৈতিক অপরাধ উত্থাপিত হয়।
ভারতের সংবিধানে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া (Impeachment Process):
বিচারপতিদের ইমপিচমেন্ট – অনুচ্ছেদ 124(4) অনুসারে:
এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতিকে শুধুমাত্র দুইটি শর্তে অপসারণ করা যেতে পারে:
- দুরাচরণ (Misbehaviour)
- অক্ষমতা (Incapacity)
ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার ধাপসমূহ:
ধাপ ১: প্রস্তাব জমা
- লোকসভা বা রাজ্যসভায় ন্যূনতম সদস্য (৫০ জন রাজ্যসভায় / ১০০ জন লোকসভায়) স্বাক্ষরিত একটি প্রস্তাব পেশ করতে হয়।
ধাপ ২: স্পিকার বা চেয়ারম্যান অনুমতি দিলে বিচার শুরু
- সংশ্লিষ্ট কক্ষে স্পিকার (লোকসভা) বা চেয়ারম্যান (রাজ্যসভা) যদি প্রস্তাব গ্রহণ করেন, তবে একটি তদন্ত কমিটি (Inquiry Committee) গঠিত হয়।
ধাপ ৩: তদন্ত কমিটির রিপোর্ট
- কমিটি বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত কিনা, তা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন পেশ করে।
ধাপ ৪: সংসদে ভোটাভুটি
- উভয় কক্ষেই আলাদা আলাদা ভাবে প্রস্তাবের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রয়োজন।
ধাপ ৫: রাষ্ট্রপতির অনুমোদন
- সংসদে পাশ হওয়ার পর, রাষ্ট্রপতি বিচারপতিকে অপসারণের আদেশ দেন।
- ইমপিচমেন্ট শাস্তিমূলক নয়, এটি শুধুই পদচ্যুতি।
- বিচারপতিদের স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ বজায় রাখার জন্য ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া অত্যন্ত কঠিন ও দীর্ঘ।
ভারতের ইতিহাসে শুধুমাত্র একজন বিচারপতির (Justice V. Ramaswami, 1993) বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব সংসদে উঠেছিল, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে তা পাশ হয়নি।

More Stories
নীতিশ সরকারের নতুন দান — ২৫ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্কে পৌঁছল ১০ হাজার টাকা
বিজয়া দশমী: অধর্মের পরাজয় ও ধর্মের জয় উদযাপন
মহা অষ্টমী : দেবী আরাধনার সর্বোচ্চ শিখর