October 5, 2025

ভারতে নিরামিষ ভোজনের প্রবণতা

সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নিরামিষভোজী জনগোষ্ঠী বিশিষ্ট দেশ হিসেবে পরিচিত। এ দেশের খাদ্যাভ্যাস বৈচিত্র্যে ভরপুর—কোথাও নিরামিষভোজন প্রধান, আবার কোথাও আমিষভোজন অধিক প্রচলিত। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভে (NFHS) এবং অন্যান্য সরকারি তথ্যসূত্র অনুসারে, ভারতের প্রায় ৩০% মানুষ নিরামিষভোজী। তবে অঞ্চলভেদে এই হার পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

ক . নিরামিষভোজীর সংখ্যায় শীর্ষ রাজ্য: রাজস্থান

  • শতাংশ: প্রায় ৭১.১৭% মানুষ নিরামিষভোজী, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
  • কারণ:
    • সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রভাব, বিশেষ করে জৈনহিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাধান্য।
  • প্রধান খাদ্য:
    • দাল, রুটি, কদ্দু, কের সাংরি, বেসনভিত্তিক নানা ধরনের তরকারি।

খ . দ্বিতীয় স্থানে: হরিয়ানা

  • শতাংশ: প্রায় ৬৯.২% মানুষ নিরামিষভোজী।
  • কারণ:
    • কৃষিভিত্তিক জীবনযাত্রা ও ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে নিরামিষ খাদ্যের জনপ্রিয়তা।
  • প্রধান খাদ্য:
    • বাজরার রুটি, সরিষার শাক, ঘরোয়া দুধ-দই ও তার ভিত্তিক পদ।

গ . নিরামিষভোজীর সংখ্যায় সর্বনিম্ন রাজ্য: পশ্চিমবঙ্গ

  • শতাংশ: মাত্র ১.৪% মানুষ নিরামিষভোজী।
  • কারণ:
    • বাঙালি সংস্কৃতিতে মাছ, মাংস, ডিম খাওয়ার প্রচলন বহু পুরনো এবং সামাজিকভাবে স্বীকৃত।
    • যদিও ইদানীং অনেকেই স্বাস্থ্য বা ধর্মীয় কারণে নিরামিষভোজী হওয়ার দিকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, সংখ্যাটি এখনও তুলনামূলকভাবে কম।
  • প্রধান খাদ্য:
    • বিভিন্ন প্রকার মাছ, মাংস, ডিম, ভাত, শাকসবজি।

ঘ . ভারতের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নিরামিষভোজী রাজ্যসমূহ

  1. গুজরাট: প্রায় ৬১% মানুষ নিরামিষভোজী।
  2. মধ্যপ্রদেশ: প্রায় ৫০% মানুষ নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করে।
  3. উত্তরপ্রদেশ: নিরামিষ-আমিষ মিশ্র খাদ্যাভ্যাসের রাজ্য হলেও নিরামিষভোজীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।

. নিরামিষভোজনের পেছনের প্রধান কারণসমূহ

  1. ধর্মীয় প্রভাব:
    • হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরামিষভোজনের প্রচলন রয়েছে।
  2. স্বাস্থ্যগত দিক:
    • অনেকে নিরামিষ খাদ্যকে হজমে সহায়কহৃদয়বান্ধব মনে করেন।
  3. সরকারি উদ্যোগ:
    • কিছু রাজ্যে সরকার নিরামিষ খাদ্য প্রচার ও প্রণোদনা দিয়ে থাকে।

ভারতের নিরামিষভোজনের চিত্র বিভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন। ধর্মীয় বিশ্বাস, আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্যসচেতনতা—সব মিলিয়ে এই খাদ্যাভ্যাস গড়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে পরিবেশগত এবং স্বাস্থ্যগত কারণে নিরামিষভোজনের প্রবণতা আরও বাড়তে পারে।

Loading