October 5, 2025

আজ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে


সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ আজ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন। ১৮৯৮ সালের ২৩ জুলাই বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই সাহিত্য সাধক। তাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নানা স্মরণানুষ্ঠান ও সাহিত্যচর্চার আয়োজন করা হয়েছে।

বীরভূমের লাভপুরে অবস্থিত তারাশঙ্কর স্মৃতিভবনে আজ সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছেন সাহিত্যপ্রেমীরা। ফুল, মালা ও প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ আলোচনা সভা, যেখানে সাহিত্যিক, গবেষক ও ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যজীবন শুরু হয় কুড়ির দশকে। ‘চৈতালী ঘূর্ণি’ ছিল তাঁর প্রথম উপন্যাস, যেটি প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালে। পরবর্তী চার দশকে তিনি বাংলা সাহিত্যকে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী রচনা। তাঁর লেখায় যেমন গ্রামীণ জীবনের বাস্তব প্রতিফলন পাওয়া যায়, তেমনই মেলে মানুষের মনস্তত্ত্বের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ।

গণদেবতা’, ‘আরোগ্যনিকেতন’, ‘হাঁসুলি ব্যাংকের উপাখ্যান’, ‘জলসাঘর’, ‘অভিযান’ প্রভৃতি উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন লাভ করেছে। তাঁর ‘গণদেবতা’ উপন্যাসের জন্য ১৯৬৬ সালে তিনি পেয়েছেন জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। এছাড়াও তিনি পদ্মশ্রী (১৯৬২), পদ্মভূষণ (১৯৬৮), সাহিত্য একাডেমি (১৯৫৬), এবং রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৫৫) সহ বহু সম্মানে ভূষিত হন।

১৯৭১ সালে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন—যদিও একই বছরে তাঁর মৃত্যু হওয়ায় (১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১) পুরস্কারটি তাঁর ঝুলিতে আসেনি।

আজ তাঁর জন্মদিনে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, “তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের এক অমর স্বাক্ষর। তাঁর সৃষ্টি আমাদের চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

সাহিত্যপ্রেমীরা মনে করছেন, নতুন প্রজন্মকে তারাশঙ্করের লেখার সঙ্গে পরিচয় করানো এবং গবেষণার পরিধি বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।

Loading