October 5, 2025

জাল ভোটার অন্তর্ভুক্তিতে দুই WBCS অফিসারের জড়িত থাকার অভিযোগে কড়া পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের

সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আঘাত হানার গুরুতর অভিযোগ উঠল দুইজন WBCS অফিসারের বিরুদ্ধে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (Chief Electoral Officer), পশ্চিমবঙ্গের তরফে জারি করা এক নির্দেশিকায় (মেমো নং ২৬১৭ – Home Elec), জানানো হয়েছে যে, সাম্প্রতিক একটি নমুনা তদন্তে ফর্ম ৬-এর অনুমোদনে গুরুতর অনিয়ম ধরা পড়েছে।

ফর্ম ৬-এর কম ১% নমুনা যাচাইয়ে দেখা গিয়েছে যে, দু’জন নির্বাচন রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ERO) বড় সংখ্যায় জাল আবেদনপত্র মঞ্জুর করেছেন। এসব ক্ষেত্রে BLO-দের যাচাই না করেই আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিপুল সংখ্যক ভোটারের তথ্যে গড়াপেটা করা হয়েছে। আরও উদ্বেগের বিষয়, অভিযুক্ত অফিসাররা ERO-Net-এ তাদের ইউজার অ্যাক্সেস BDO অফিস বা চুক্তিভিত্তিক Data Entry Operators-দের হস্তান্তর করেছেন, যার ফলে নিয়মবহির্ভূতভাবে ফর্ম ৬ বাতিল বা অনুমোদিত হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই অনিয়মের তদন্ত ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলাস্তরে সমস্ত জেলা নির্বাচন অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গত এক বছরে যত ফর্ম ৬ নিষ্পত্তি হয়েছে, তা একটি সিনিয়র অফিসারদের দল গঠন করে ১৪ আগস্ট, ২০২৫-এর মধ্যে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।

এ ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনে একটি কড়া বার্তা দিয়েছে—সরকারি দায়িত্বে থেকে যদি কেউ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে সংবিধানবিরোধী কাজ করেন, তাহলে তার পরিণতি অত্যন্ত কঠোর হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ স্পষ্ট করেছে যে, সরকারি কর্মচারীরা যদি তৃণমূল বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষায় জড়িয়ে পড়েন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিকৃত করেন, তবে ভবিষ্যৎ সুখকর হবে না। BLO বা চুক্তিভিত্তিক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদেরও এই অনিয়ম থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এখন সময় এসেছে সরকারি কর্মচারীদের আত্মসমীক্ষার—চাকরি যখন সংবিধানের শপথ নিয়ে পেয়েছেন, তখন সেই শপথ রক্ষা করাই সর্বাগ্রে কর্তব্য। সাময়িক লোভ বা রাজনৈতিক চাপের কাছে মাথা নত করলে, ভবিষ্যৎ শুধু পেশাগত নয়, সামাজিকভাবেও কলঙ্কিত হতে পারে।

Loading