October 5, 2025

হুগলির গর্ব: কামারপুকুরের কণ্ঠশিল্পী পূর্বাশা

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ; কামারপুকুর তথা সমগ্র হুগলি জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নাম – পূর্বাশা। নামের অর্থই যেমন “পূর্ব দিক থেকে আসা আলো ও আশার প্রতীক”, তেমনি তাঁর সঙ্গীতজীবনও যেন আলো ছড়িয়েছে এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্তে।

মাত্র আট বছর বয়সে প্রথম রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চে পা রাখা পূর্বাশা আজ বহু পরিচিত মুখ। জি বাংলা, জি টিভি, রূপসী বাংলা, দূরদর্শন থেকে শুরু করে আকাশবাণীর মতো আকাশছোঁয়া প্ল্যাটফর্ম— সর্বত্রই নিজের গানের জাদুতে মুগ্ধ করেছেন শ্রোতাদের। বাঁকুড়া জেলার মেয়ে, বাবার চাকরিসূত্রে বড় হয়েছেন বারাসাতে। বর্তমানে বিবাহসূত্রে স্বামীর বাড়ি কামারপুকুরে হলেও, গানের প্রতি আবেগে তাঁর পথচলা অবিচল।

শৈশবে মায়ের হাত ধরে গানের শুরু। বাড়ির পরিবেশেই সুরের সঙ্গে পরিচয়, পরে ক্লাসিক্যাল সংগীতের উপর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। পড়াশোনাতেও বেছে নিয়েছেন সঙ্গীতকেই। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সঙ্গীতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। ভবিষ্যৎ স্বপ্ন— পিএইচডি সম্পূর্ণ করে অধ্যাপনা।

বিয়ের পরও শাশুড়ি মায়ের মাতৃসুলভ স্নেহে গানের চর্চা আগের মতোই অব্যাহত রেখেছেন। সম্প্রতি এক ক্যামেরাসামনেই অকপট স্বীকারোক্তি করেছেন, এই ভালোবাসা ও আশীর্বাদই তাঁকে আরও এগিয়ে যেতে শক্তি জোগায়।

মহালয়ার প্রাক্কালে আগমনী গান আর পুজোর বিশেষ গানের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে আশার প্রতীক হয়ে উঠেছেন কামারপুকুরের এই কণ্ঠশিল্পী।

প্রেম আর সুরে বাঁধা পথচলা: পূর্বাশার জীবনের নতুন অধ্যায়, কণ্ঠশিল্পী পূর্বাশার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেন সুরের মতোই মধুর। সংগীত তাঁর প্রাণ, আর সেই সংগীতকেই সঙ্গী করে এসেছে তাঁর ভালোবাসার মানুষও। সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচয় থেকেই শুরু হয়েছিল প্রেম, যা পরিণতি পেয়েছে বিবাহবন্ধনে। স্বামীও সংগীতের মানুষ— এক দক্ষ গিটার বাদক। ফলে দু’জনের জীবনেই সুরের অনুরণন একে অপরকে আরও কাছে টেনেছে। আজ পূর্বাশার জীবনে স্বামী কেবল সঙ্গী নন, বরং তাঁর সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। দৈনন্দিন জীবনে স্বামীর যত্ন আর ভালোবাসা পূর্বাশাকে গানের সাধনায় আরও গভীর মনোযোগী করে তুলছে। স্টেজে কিংবা রেকর্ডিং স্টুডিওতে, প্রতিটি পদক্ষেপে স্বামীর অটল সমর্থন তাঁর আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দেয়। পূর্বাশার কথায়— *“ভালোবাসা শুধু হৃদয়ের সম্পর্ক নয়, আমার কাছে তা সংগীতেরও সম্পর্ক। আমরা একসঙ্গে যখন সুরে মিশে যাই, তখন মনে হয় এটাই জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”*প্রেম, সংসার আর সংগীত— এই তিনের মেলবন্ধনেই আজ নতুন আলোয় কামারপুকুরের কণ্ঠশিল্পী পূর্বাশা। সামনে পুজোর মরশুমে তাঁর গান শোনার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে বসে আছে অসংখ্য শ্রোতা।

আগামী দিনে আরও উঁচু শিখরে পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখছেন পূর্বাশা। তাঁর সুরেলা কণ্ঠ নিঃসন্দেহে বাংলার সংগীতজগতে এক অনন্য সম্পদ হয়ে থাকবে।

Loading