সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি—প্রতিটি জেলাই আজ কার্যত ভাসছে বন্যার জলে। বহু গ্রাম ও জনপদ জলের তলায়, ভেঙে পড়েছে রাস্তা, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি ও চাষের জমি। এই চরম বিপদের সময়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সোমবার উত্তরবঙ্গে পৌঁছলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি শ্রী শমীক ভট্টাচার্য্য।
তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন, দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন ও সাহায্যের আশ্বাস দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কোচবিহার উত্তর বিধানসভার বিধায়ক সুকুমার রায়, ফালাকাটার বিধায়ক সৌমেন রায়, এবং শীতলকুচির বিধায়ক বরেন চন্দ্র বর্মন। প্রত্যেকেই বন্যাদুর্গতদের হাতে শুকনো খাবার, ওষুধ, ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন।
যেখানে প্রশাসনের দেখা মিলছে না, সেখানে বিজেপি কর্মীরা নিজের হাতে দুর্গতদের সাহায্য করছেন। অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ—এই সময়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যস্ত ছিলেন কলকাতার কার্নিভাল অনুষ্ঠানে।
“উত্তরবঙ্গ ডুবছে, আর মুখ্যমন্ত্রী নাচছেন উৎসবে!” — এমনই তীব্র কটাক্ষ রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য্যের। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষ এই রাজ্যেরই নাগরিক। তাঁদের প্রতি এমন অবহেলা ক্ষমার অযোগ্য।”
ত্রাণ বিলিতে হামলা, আহত বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক
দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। নাগরাকাটার পথে ত্রাণ বিলির সময় নৃশংস হামলার মুখে পড়েন মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তৃণমূল দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া পাথরে গুরুতর আহত হন খগেন মুর্মু, মাথা ফেটে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ডঃ সুধাংশু ত্রিবেদী দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “ত্রাণে বাধা ও হামলা মানে মানবিকতার ওপর আঘাত। তৃণমূল রাজনীতি ছাড়া কিছু বোঝে না।”
বিজেপির দাবি — মানুষই আমাদের শক্তি
কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত বন্যাদুর্গত এলাকায় বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা, বিধায়ক বিশাল লামা, মনোজ ওরাও সহ একাধিক নেতা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মনোজ ওরাও বলেন, “এটা শুধু রাজনীতি নয়, এটা মানুষের প্রতি দায়িত্ব। মানুষ জানে—বিপদের সময় পাশে থাকে বিজেপি।”
বন্যায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহত শতাধিক। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপের দেখা মেলেনি। শমীক ভট্টাচার্য্য বলেন, “মাননীয়া বলেছিলেন উত্তরবঙ্গ হবে উন্নয়নের মডেল। কিন্তু আজ উত্তরবঙ্গ ডুবে আছে তাঁর মিথ্যার বন্যায়।”
দুর্যোগের মুখে রাজ্য সরকারের নীরবতা, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গবাসী আজ একটাই প্রশ্ন তুলছেন —
“মাননীয়া, আপনার কাছে আমরা কি দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক?”

![]()

More Stories
পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের ডাক ব্রিগেডে, রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ সনাতন সংস্কৃতি সংসদের
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ইভিএম–ভিভিপ্যাটের এফএলসি শুরু রাজ্যে, চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত
হাতুড়ে ডাক্তারি বনাম পাশ করা ডাক্তার—অরাজকতার জঞ্জালে বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা