December 1, 2025

কামারপুকুরে পরমপ্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সৎসঙ্গ মন্দির — ভক্তি, শান্তি ও মানবতার আশ্রয়স্থল

সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ হুগলির কামারপুকুর চটি থেকে পশ্চিমে মাত্র আধ কিলোমিটার দূরে, শ্রীপুর মৌজার বদনগঞ্জ রোডের ধারে বিস্তীর্ণ ৫ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠেছে এক আধ্যাত্মিক সৌধ— পরমপ্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সৎসঙ্গ মন্দির। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া এই মন্দিরের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হয় ছয় বছরের প্রচেষ্টায়, আর ২০২৩ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি, বুধবার, পরমপূজ্যপাদ শ্রী শ্রী অবিন দাদা (অবিনেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী) উদ্বোধন করেন মন্দিরটি।

প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে ঘেরা এই সৎসঙ্গ বিহারে প্রবেশ করলেই মনে হয় এক অপরূপ শান্তি নেমে এসেছে— যেন সমগ্র প্রাঙ্গণজুড়ে ঠাকুরের “জীবনদেবতা” বার্তা প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

মন্দিরের দৈনন্দিন কর্মসূচিতে প্রতিদিন দুই বেলা— সকাল ও সন্ধ্যায় ১৪ মিনিটের প্রার্থনা, যার সময় প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিবর্তন হয়। দিনে চারবার ভোগরাগ নিবেদন করা হয় শ্রী শ্রী ঠাকুরের উদ্দেশ্যে। মন্দির দর্শনের সময় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা, এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। বিকেলের সময় ভক্তদের ভিড়ে মুখর থাকে সমগ্র প্রাঙ্গণ।

পরমপূজ্যপাদ শ্রী শ্রী আচার্যদেবের অনুপ্রেরণায় এবং শ্রী স্বপন কুমার রায় দাদার (সহপ্রতি ঋত্বিক) নেতৃত্বে এই সৎসঙ্গ বিহার আজ এক অনন্য আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। চারতলা বিশিষ্ট এই ভবনের সর্বোচ্চ তলায় বিরাজমান আছেন পরমপ্রেমময় শ্রী শ্রী ঠাকুর, পরমারাধ্যা শ্রী শ্রী বড়মা, ও পরমপূজ্যপাদ শ্রী শ্রী বড়দা-র শ্রীবিগ্রহ। তার নিচের তলায় রয়েছে আচার্য ভবন

শুধু মন্দিরই নয়— এই কেন্দ্রের অধীনে বর্তমানে গোঘাট থানা জুড়ে ২৬টি উপযোজনা কেন্দ্র ও উপাসনাস্থল সক্রিয়ভাবে ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।

প্রতি বছর শীতকালে বার্ষিক অনুষ্ঠান হয় সৎসঙ্গ দেওঘরের নির্দেশে। এছাড়াও পালিত হয় —

  • ৩০শে ভাদ্র: ঠাকুরের জন্মোৎসব
  • ১৪ই শ্রাবণ: বড়মায়ের জন্মোৎসব
  • আচার্যদেবের জন্মদিন
  • প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ রবিবার: কর্মী বৈঠক
  • শেষ রবিবার: সৎসঙ্গ ও মাতৃসম্মেলন
  • ৯ই জানুয়ারি: বার্ষিক বনভোজন উৎসব

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সন্ধ্যাকালীন সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়, যেখানে এলাকার বহু ভক্ত সমবেত হন ভক্তি, প্রেম ও মানবকল্যাণের বার্তা গ্রহণে।

প্রকৃতি, শান্তি ও ভক্তির মিলনে গড়ে ওঠা কামারপুকুরের এই সৎসঙ্গ মন্দির আজ শুধুই এক ধর্মীয় কেন্দ্র নয়— এটি এক আত্মিক আশ্রয়স্থল, যেখানে আসলে মানুষ খুঁজে পায় অন্তরের শান্তি ও ঈশ্বরচেতনার ছোঁয়া।

Loading