সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ: গরমের তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে সকলেই চাইছিলেন কালবৈশাখী। আর সেই কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টিই এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বোরো ধান চাষিদের। শনি-রবিবারের ঝড়-বৃষ্টির পর মঙ্গলবার সকালের বৃষ্টিতে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বিঘের পর বিঘে জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও পাকা ধান ঝরে পড়েছে, কোথাও ভেঙে গাছ লুটিয়ে পড়েছে জমিতে। অনেক জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেছে। সেখানে পাকা ধানের কল বেরোনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যে সমস্ত জমিতে কাটা ধান পড়েছিল তাদের বেশকিছু ধান উড়িয়ে নিয়ে চলে গেছে। আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল, পুরশুড়া সব ব্লকেই একই ছবি। কোথাও বালতি দিয়ে জল বের করে ধান কাটা চলছে, আবার কোথাও জল থেকে ছেঁকে ধান তোলা হচ্ছে। মাটিতে নুয়ে পড়ায় যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটা যাচ্ছে না। ফলে মজুর লাগিয়ে অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে বলে জানালেন চাষিরা। গোঘাটের তরুণ বাগ, তরুণ ঘোষ প্রমূখ চাষিরা জানালেন, যখন বৃষ্টি দরকার ছিল তখন হয়নি। জল কিনে চাষ করতে হয়েছে। আর এখন ধান তোলার সময় ঝড়-বৃষ্টিতে সবকিছু ওলট-পালট করে দিয়েছে। আলু চাষ গেছে, এবার বোরো ধানও গেল। একেবারে বিপদজনক অবস্থা। কিভাবে সংসার চলবে বুঝতে পারছি না। মহাজনদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে চাষ করা অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন। প্রায় একই আশঙ্কার কথা জানালেন আরামবাগের বৃন্দাবনপুরের বাসিন্দা গঙ্গারাম মালিক, অশোক প্রামানিক। গঙ্গারাম মালিক বলেন, ধান ভালই হয়েছিল। কিন্তু এখন ঝড়-বৃষ্টি হয়ে মাঠ থেকে তোলা যাচ্ছে না। চাষিদের সব শেষ করে দিচ্ছে। ৬ বিঘা জমির মধ্যে চার বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছরও একই অবস্থা হয়েছিল। তবে গতবছর সরকার থেকে কিছু অনুদান পাওয়া গিয়েছিল। তাই এবারও যদি সরকার অনুদানের ব্যবস্থা করে তাহলে চাষিরা উপকৃত হবে। নাহলে সবাই শেষ হয়ে যাবে। অশোক প্রামানিক বলেন, ১২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। তার সিকিভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। জলে পড়ে আছে। একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে চাষিদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ছে। যদিও জেলা কৃষি দপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, এই সময় ঝড়-বৃষ্টি হবে এটাই স্বাভাবিক। চাষিদেরকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। বেশিরভাগ চাষি ধান কেটে নিয়েছে। যারা কাটেনি তারা কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছে।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি