সোমালিয়া সংবাদ, গোঘাট: অম্ববাচিতে উৎসবে মেতে ওঠেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। আর গোঘাট ও তার আশেপাশের আদিবাসী মহল্লার বাসিন্দারা এই সময় মেয়ে-জামাইকে কাঠাল উপহার দেন। অনেকটা জামাইষষ্ঠীর মতো। আর তাঁদের এই অনুষ্ঠানে জামাইকে কাঁঠাল খাওয়ানো বাধ্যতামূলক। কেউ মেয়ে-জামাইকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ান। আবার কেউবা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন জিনিস উপহার দিয়ে আসেন। তবে অবশ্যই কাঁঠাল থাকবেই। আর তাই বছরের পর বছর ধরে এই সময় গোঘাটের কামারপুকুরে কাঁঠাল মেলা হয়ে আসছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে কাঁঠাল বিক্রেতারা এই মেলায় হাজির হয়েছেন। প্রতিবছর অম্বুবাচীর সময় কামারপুকুর বাইপাসের ধারে এই মেলা বসে। চলে প্রায় মাসখানেক। এলাকার মানুষের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ এই মেলায় কাঁঠাল কেনার জন্য ভিড় করেন। বিশেষ করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। গোঘাটের নলডুবির বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ টুডু জানালেন,‘পূর্বপুরুষদের আমল থেকেই এই দিনে জামাইরা শ্বশুরবাড়িতে আসেন। তাঁদেরকে আদর আপ্যায়ন করা হয়। পাঁচ রকম ফল দিতে হয়। তার মধ্যে কাঁঠাল অবশ্যই থাকতে হবে। তাই কাঁঠাল কিনে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’ কোতুলপুরের তেঁতুলমুড়ির বাসিন্দা মঙ্গল হেমব্রম সাইকেলে করে কামারপুকুরে কাঁঠাল কিনতে এসেছিলেন। তিনি জানালেন,‘প্রতিবছরই এই দিনে জামাইকে নিমন্ত্রণ করতে হয়। তাই ভালোভাবে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করতে হয়। কিন্তু সেই খাবারের তালিকায় কাঁঠাল থাকতেই হবে। নাহলে জামাইয়ের আদরযত্ন পুরো হবে না।’ অন্যদিকে এই মেলায় কাঁঠাল বিক্রি করতে এসেছেন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাসিন্দা সেখ মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৩৩ বছর ধরে আমরা এখানে আসছি। মহাজনদের কাছ থেকে কাঁঠাল কিনে নিয়ে এসে এখানে বিক্রি করি। প্রায় মাসখানেক থাকি। ভালই কেনাবেচা হয়। এ বছরেও এসেছি। কিন্তু এবছর তেমন বিক্রি হচ্ছে না।’ মহিউদ্দিনের মতো বাইরে থেকে ১০-১২ জন বিক্রেতা এই মেলায় হাজির হয়েছেন। তাঁদের কেউ দশ বছর, কেউ আবার ছ বছর ধরে এই মেলায় আসছেন। তাঁরা সকলেই জানালেন, এলাকায় বিক্রি করার থেকে এই মেলা থেকে কিছু বাড়তি রোজগার হয়। তাই তাঁরা বার বার এখানে আসেন। কিন্তু এ বছর কি হবে আর কয়েকদিন গেলে তবেই বোঝা যাবে।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি