সোমালিয়া সংবাদ, কলকাতা: নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দেশে চার রাজধানীর দাবীকে নিয়ে শোরগোল পড়ে গেছে। কেউ কেউ এই দাবিকে সঙ্গত বলছেন, আবার কারও কারও মতে এই দাবি অবাস্তব এবং যৌক্তিকতাহীন। রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য তাদের নিজস্ব সুবিধা-অসুবিধার নিরিখে মতামত প্রকাশ করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মতে, এত বড় দেশে শুধুমাত্র দিল্লি থেকে দেশের শাসন ব্যবস্থা চালানো অসুবিধাজনক। তার থেকে দেশের চার প্রান্তে চারটি রাজধানী হলে শাসন ব্যবস্থা আরও সুন্দর ও সুদৃঢ় হবে। দিল্লি ছাড়াও তিনি উত্তর, দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে আরও একটি করে রাজধানী দাবি করেছেন। কিন্তু পশ্চিম ভারতের কথা তিনি উল্লেখ করেননি। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, পশ্চিম ভারতে অবস্থিত গুজরাট রাজ্য নরেন্দ্র মোদির রাজ্য হিসেবে রাজনীতিতে বেশি পরিচিত।
তবে বিশ্বের অনেক দেশই একাধিক রাজধানী থেকে দেশের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করে সেদেশের সরকার। তেমনই কিছু উল্লেখযোগ্য দেশের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক–১। শ্রীলংকা: কলম্বো ও শ্রী জয়াবর্ধেনেপুরা কোট্টে।২। বলিভিয়া: লাপাজ ও শুকরে ৩। নেদারল্যান্ডস: আমস্টারডাম ও দ্য হেগ৪। দক্ষিণ আফ্রিকা: প্রিটোরিয়া , কেপটাউন ও ব্লুমফনটিন৫। চিলি: সান্তিয়াগো ও ভ্যালপারাইসো৬। জর্জিয়া: সৎবলসী ও কুতাইসি৭। হন্ডুরাস: তেগুকিগালপা ও কমায়ুগুয়েলা৮। মালয়েশিয়া: কুয়ালালামপুর ও পুত্রজায়া৯। মন্টেনিগ্রো: পডগর্সিয়া ও সেটিনজে১০। সোয়াজিল্যান্ড: সোয়াজিল্যান্ড ও লোবাম্বা১১। ইজরায়েল: জেরুজালেম ও তেল আভিভ১২। বেনিন: পোর্তনোভো ও কোতোনৌ১৩। বুরুন্ডি: জিতেগা ও বুজুম্বুরা১৪। আইভরি কোস্ট: জামৌসৌক্র ও আবিদজান১৫। তানজানিয়া: ডোদোমা ও দার উস সালাম১৬। ইয়েমেন: সানা ও এডেন১৭। দক্ষিণ কোরিয়া: সিওল ও সেজং সিটি
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এই সমস্ত দেশের একটি প্রধান রাজধানী থাকলেও প্রশাসনিক, বিচারবিভাগীয় এবং আইন বিভাগের কাজকর্ম সহজ ও সুন্দরভাবে রূপায়নের জন্য একাধিক রাজধানী তৈরি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই দাবি অযৌক্তিক নয় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক ও বুদ্ধিজীবী মহল। তাছাড়া আমাদের দেশের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যেও একাধিক রাজধানী রয়েছে। যেমন জম্মু-কাশ্মীরের প্রধান রাজধানী শ্রীনগর হলেও শীতকালে রাজধানী হিসেবে ব্যবহার করা হয় জম্মুকে। উত্তরাখণ্ডেরও দুটি রাজধানী, দেরাদুন ও গৌরসৈন।এছাড়া অন্ধপ্রদেশ সরকার আবার তিনটি রাজধানী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেগুলি হল অমরাবতী, বিশাখাপত্তনম এবং কুর্ণুল। এক সময় এই ভারতবর্ষেও দুটি রাজধানী ছিল। ব্রিটিশ শাসনে দীর্ঘদিন কলকাতা প্রধান রাজধানী হিসেবে স্বীকৃত ছিল। কিন্তু ১৮৬৪ সালে ব্রিটিশরা হিমাচল প্রদেশের সিমলাকে গ্রীষ্মকালীন রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯১১ সালে কলকাতা থেকে রাজধানী দিল্লিতে স্থানান্তরিত করা হলেও ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত সিমলা দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে স্বীকৃত ছিল।
![]()

More Stories
পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের ডাক ব্রিগেডে, রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ সনাতন সংস্কৃতি সংসদের
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ইভিএম–ভিভিপ্যাটের এফএলসি শুরু রাজ্যে, চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত
হাতুড়ে ডাক্তারি বনাম পাশ করা ডাক্তার—অরাজকতার জঞ্জালে বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা