October 6, 2025

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে ভিন রাজ্যের ছোট দলগুলি

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভিন রাজ্য থেকে আসা আঞ্চলিক দলগুলির হাত ধরে এবার ব্যাপক ভোট কাটাকাটি খেলা চলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ কিছু কিছু অঞ্চলে বিশেষ কিছু সম্প্রদায়ের মানুষের নির্দিষ্ট ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। এতদিন ধরে সেই ভোটব্যাঙ্ক শাসক বা মূল বিরোধী দলগুলির ভোট বাক্সে পড়তো। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে আবেদন সত্বেও তাদের কোনো দাবি পূরণ হয়নি বলে অনেকেরই অভিযোগ। তাই  ওই সমস্ত নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষজন নিজস্ব আঞ্চলিক দলের ওপর নির্ভর করে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। আর তাঁঁদের সেই ক্ষোভকে হাতিয়ার করে ভিন রাজ্যের কিছু রাজনৈতিক দল এবার ভোটের লড়াইয়ে নামতে চাইছে। এ প্রসঙ্গে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘোষণা করেছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার শিবু সোরেন গোষ্ঠীর প্রধান হেমন্ত সোরেন । তিনি রীতিমতো ঝাড়গ্রামের সার্কাস ময়দানে সভা করে এরাজ্যে নিজেদের দলের প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাঁঁরা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরসহ মোট সাতটি জেলায় প্রার্থী দেবেন বলে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আদিবাসীদের এখন চাকতিতে পেষা হচ্ছে। নতুন নতুন আইন তৈরি হচ্ছে। তাতে আদিবাসীদের জীবন হারাম হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। কিন্তু এ রাজ্যে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা যদি বেশি মাত্রায় প্রার্থী দেয় তাহলে তৃণমূলের ভোট ব্যাংকেই তার প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। আর তা যে অমূলক নয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যেই পরিষ্কর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যখন হেমন্ত সোরেনের  পাশে কেউ ছিল না তখন তিনি তাঁঁকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন। এখন বাংলায় এসে ভোট চাইছেন। বিষয়টি তাঁঁর খুব খারাপ লেগেছে। তবে শুধু ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা নয়, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ এ রাজ্যে  ৭০ থেকে ৭৫ টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য, এ রাজ্যে জে ডি ইউ ২০০৬ সালে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করেছিল। ২০১১ সালে তারা এককভাবে ৭১টি আসনে লড়াই করেছিল। ২০১৬ সালে কংগ্রেস ও সিপিএম জোটের সঙ্গে দুটি আসনে লড়াই করেছিল। এছাড়াও শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত জানিয়েছেন, বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে তাঁঁরা অনেক বেশি সংখ্যক আসনে প্রার্থী দেবে। এর জন্য তাঁঁরা শীঘ্রই কলকাতায় আসছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে মিম সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও বাংলার ভোটে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে যাচ্ছেন। তিনি আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দলের সঙ্গে একজোট হয়ে লড়াই করবেন। অর্থাৎ বিজেপি, তৃণমূল এবং কংগ্রেস-সিপিএম জোট ছাড়াও অন্যান্য ছোট দলগুলোর হাত ধরে এবার বিধানসভা নির্বাচনে জয়-পরাজয় অনেকটাই নির্ধারণ হবে। ভোট কাটাকাটির খেলায় শেষ পর্যন্ত কোন্ দল বাজিমাত করে তার জন্য আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে।

Loading