October 5, 2025

দুর্গাপুজো নয়, খানাকুলের মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন জগদ্ধাত্রী পুজোতে

সোমালিয়া সংবাদ, খানাকুল: বন্যা কবলিত খানাকুলে দুর্গাপুজো নয়, এলাকার মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন জগদ্ধাত্রী পুজোতে। কারণ প্রায় প্রতি বছরই ছোট-বড় বন্যার কবলে পড়তে হয় খানাকুলবাসীকে। আর সেই ক্ষত শুকাতে শুকাতে দুর্গাপুজোও পার হয়ে যায়। তাই প্রায় তিন দশক ধরে এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জগদ্ধাত্রী পুজো। শুধুমাত্র খানাকুল-২ নম্বর ব্লকের রাজহাটিতেই প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৪টি জগদ্ধাত্রী পুজো অনুষ্ঠিত হয়। আর এই পুজোগুলিকে কেন্দ্র করে শুধু খানাকুলের মানুষ নয়, পার্শ্ববর্তী হুগলি জেলার অন্যান্য এলাকার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার মানুষও এখানে পুজো দেখতে ভিড় করেন। এখানে পুজো শুরু হয় নবমীর দিন থেকে, চলে চার দিন। এই পুজোগুলি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য একটি পুজো সমন্বয় কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। এই কমিটির অধীনেই পুজোগুলি অনুষ্ঠিত হয়। নবমীর দিন কুমারীদের নিয়ে এলাকায় এক শোভাযাত্রাও বের করা হয়।

গত কয়েক বছর ধরে সচেতনতার বার্তা দিয়ে এখানকার মন্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। যেমন দিশারী-১এর পল্লীর থিম ‘বাংলার হস্তশিল্প’। এই পুজো কমিটির পক্ষ থেকে ডেঙ্গি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। এই উপলক্ষে অসহায় মানুষদের মশারি বিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার এই পুজো ষোলো বছরে পা দিয়েছে। আর এক পুজো কমিটি ‘নান্দনিক’ এবার ১৪ বছরে পা রেখেছে। তারাও কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের সম্বর্ধনার পাশাপাশি দুঃস্থ পড়ুয়াদের জন্য নানা জিনিস উপহারের ব্যবস্থা রেখেছে। এছাড়াও কোন মন্ডপে জল সংরক্ষণের বার্তা, কোথাও পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা প্রচার চলছে। আবার কেউ কেউ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছে। এছাড়াও বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ সবই এখন খানাকুলের জগদ্ধাত্রী পুজোয় সাধারণ মানুষকে সচেতনতার মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে রাজহাটি জগদ্ধাত্রী পুজো সমন্বয় কমিটির সম্পাদক অমিত আঢ্য বলেন, এখানকার জগদ্ধাত্রী পুজোর মধ্য দিয়ে সমাজসেবা এবং সচেতনতামূলক কাজ করাই পুজো কমিটিগুলির প্রধান লক্ষ্য। খানাকুল বন্যাপ্রবণ এলাকা, দুর্গাপুজোর আনন্দ এখানকার মানুষ তেমনভাবে উপভোগ করতে পারেন না। আর তাই সেই অভাব পূরণ করার জন্যই এখানকার মানুষজন সারা বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্যই অপেক্ষা করে থাকেন।

Loading