October 5, 2025

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি! ৪১ বছরের অন্ধকার কাটিয়ে বাড়িতে বিদ্যুৎ এলো

সোমালিয়া সংবাদ, গোঘাট: দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় ৭৪ বছর কেটে গেছে। আধুনিক সভ্যতার বিকাশ ত্বরান্বিত হয়েছে। বিশ্ব মানচিত্রের পাশাপাশি আমাদের দেশেও বিজ্ঞানের অগ্রগতি নতুন মাত্রা এনেছে। বাড়িতে বাড়িতে ইন্টারনেট, কম্পিউটার অ্যান্ড্রয়েড ফোন এখন আর নতুন কোন ঘটনা নয়। এরকম একটা সময় দাঁড়িয়ে বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগ নেই এটা ভাবতেই অবাক লাগে। কিন্তু এটাই এতদিন বাস্তব ছিল গোঘাট-১ নম্বর ব্লকের শুনিয়া গ্রামের বেশকিছু পরিবারের কাছে। যদিও সেই অন্ধকার কাটিয়ে সোমবার বাড়িতে বিদ্যুতের আলো জ্বলে উঠলো। আর সেই সঙ্গে ওই পরিবারগুলিতে এখন বাঁধনহারা খুশির হাওয়া। জানা গেছে, এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে গ্রামের ঘোষ পরিবার গুলির মধ্যে বিবাদ বাধে। কোন্ দিকে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হবে তাই নিয়ে দেখা দেয় সমস্যা। সেটা ছিল ১৯৭৯ সাল। তখন অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে এলাকায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বন্ধ হয়ে যায় গ্রামের ওই সমস্ত বাড়িগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ।

বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ঘোষ পরিবারের সদস্যরা। প্রথমে আরামবাগ মহকুমা আদালত ও কলকাতা উচ্চ আদালতে শুরু হয় দীর্ঘ আইনি লড়াই। গ্রামের বাসিন্দা রনজিত ঘোষ জানান, ওই আইনি লড়াইয়ে দু বছর আগেই তাঁঁরা জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও প্রতিবেশীদের বাধায়  বিদ্যুৎ সংযোগ সম্ভব হয়নি। তাই তাঁরা সেই সময় হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের কাছে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তাতেও কোনো ফল হয়নি। রনজিত বাবুদের অভিযোগ, শক্তিপদ ঘোষ ও তাঁর ভাইপোদের বাধার জন্যই এই ঘটনা ঘটছে। যদিও শক্তিপদ ঘোষের ভাইপো সাধন ঘোষের বক্তব্য, রনজিত ঘোষ ও তাঁঁর পরিবারের লোকজনই তাঁঁদের নামে মিথ্যা বদনাম করছে। ওদের জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে ঘটনা যাই হোক, সোমবার ওই শুনিয়া গ্রামে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন  করা হয়। আর সেই পুলিশের উপস্থিতি রনজিত ঘোষ সহ বেশ কয়েকটি পরিবারে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে গেলেন। আর সেইসঙ্গে দীর্ঘ চার দশক পর ওই সমস্ত পরিবারে জ্বলে উঠলো বিদ্যুতের আলো, দূর হল অন্ধকারের অভিশাপ।

Loading