সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখার সময় বারবার কেঁদে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এমনকি মাঝপথে বেশ কয়েকবার তিনি বক্তব্য থামিয়ে দিতে বাধ্য হন। কথা বলার সময় বারবার গলা বুজে আসছিল। জল খেয়ে আবার নতুন করে কথা বলতে শুরু করেন। কিন্তু আবেগে, কৃতজ্ঞতায় বারবার গলা বুজে যেতে থাকে। রাজ্যসভায় বসে থাকা অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যান। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এভাবে কাঁঁদতে খুব কমই দেখা গেছে। তাই বিষয়টি সকলের কাছেই একটু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। আসলে এদিন রাজ্যসভার চার সদস্যের কর্মদিবসের শেষ দিন ছিল। তাঁঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এদিন সংসদের উচ্চকক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একসময় তিনি বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদকে বিদায়-সম্ভাষণ জানাতে শুরু করেন। কিন্তু প্রকৃত বন্ধুর বিদায়বেলায় বারবার তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়া সত্ত্বেও এদিন তিনি গুলাম নবি আজাদের কাজের দরাজ প্রশংসা করেন।
পুরনো দিনের স্মৃতিচারণায় ডুবে যান। মোদি জানান, একসময় গুলাম নবি আজাদ জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আর তখন নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওনার সঙ্গে আমার বহুদিনের সম্পর্ক। আমরা একসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগেই আমার যোগাযোগ ছিল। তখন আজাদ সাহেব ভীষণ ভাবে সক্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। অনেকেই জানেন না, যে গুলাম নবিজীর বাগান পরিচর্যার ওপর আলাদা আবেগ রয়েছে। আমি কোনদিনই গুলাম নবিজী ও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অবদান ভুলব না। যখন সন্ত্রাস হামলার জন্য গুজরাটের বহু মানুষ কাশ্মীরে আটকে ছিলেন সেই রাতে গুলাম নবিজী আমাকে ফোন করেছিলেন। এসব কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রীর চোখ জলে ভরে ওঠে। বারবার তাঁঁকে জল খেতে হয়। কিছুক্ষণ থেমে তিনি আবার বলেন, মনে হয়েছিল পরিবারের কোনো সদস্য ফোন করেছেন। আমায় এ রকম অনুভূতি উনি আমাকে দেখিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতা আসবে যাবে। কিন্তু কেউ কিভাবে সামলাচ্ছেন সেটাই বড় কথা। মোদিজী বারবার থেমে গুলাম নবি আজাদকে কুর্নিশ জানান। কখনও কথায়, আবার কখনও আবেগে ইঙ্গিতে।
এক সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জন্য এটা অত্যন্ত আবেগপ্রবণ মুহূর্ত। আমি আপনাকে অবসর নিতে দেব না। আপনার পরামর্শ নিতেই থাকব। আমার দরজা সব সময় আপনার জন্য খোলা থাকবে। এদিন প্রকৃত বন্ধু গুলাম নবিজীর কথা বলতে গিয়ে মোদি বলেন, গুলাম নবিজীর পরিবর্তে যিনি তাঁর জায়গায় আসবেন তাঁঁর পক্ষে নবিজীর কাজ মিলানো কঠিন হবে। কারণ গুলাম নবিজী শুধু নিজের কথা নয়, দেশ ও সংসদের জন্য একইভাবে ভেবে গেছেন। উচ্চকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর এই আবেগঘন বক্তব্যের জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলেন না। এমনকি তাঁর বক্তব্য শুনে স্বয়ং গুলাম নবি আজাদও অভিভূত হয়ে পড়েন। বারবার তাঁঁকে নিজের বুকের কাছে দুই হাত জোড় করে কৃতজ্ঞতা ফিরিয়ে দিতে দেখা যায়। তাঁঁর চোখ দুটিও জলে ভরে উঠেছিল।
More Stories
বিহার নির্বাচনে কংগ্রেসের তিন পর্যবেক্ষক ঘোষিত
মহালয়ার ভোরে রেডিও শোনার ঐতিহ্য ও বর্তমান বাস্তবতা
BRICS দেশগুলোর সঙ্গে ১০০% রুপিতে বাণিজ্যের প্রসঙ্গ