October 5, 2025

বনফুলের শ্রেষ্ঠ একটি গরু’র রচনা

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: একদিন আই এস সি পড়ার ক্লাসে এলেন বাঙলার অধ্যাপক চারুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। অফ পিরীয়ড। এসেই বললেন রচনা লেখো। যদিও সেই ক্লাসের সবার পাঠ্য বিষয় ছিল অঙ্ক, রসায়ন ও উদ্ভিদবিদ্যা। ছাত্রদের প্রশ্ন – “কি লিখব স্যার” ?স্যার বললেন”গরুর রচনা লেখো”। শুনেই সবার মাথায় হাত। স্যার বলছেন কী ? এই উচু ক্লাসে, বুড়ো বয়সে গরু রচনা! কেউ কেউ মুখ টিপে হাসতেও লাগলো। হাসলো না শুধু একটি ছাত্র। সে বললো – “স্যার, রচনা মানে গদ্য হতে হবে এমন মানে আছে কি ?”স্যার বললেন – ” সেরকম তো কথা নেই”। খানিক বাদে ছাত্রটি হাজির করল তার লেখা। ক্লাসে বসে বাকিরা তখনও ভাবছে স্যার বুঝি তাদের সাথে ঠাট্টা তামাশা করছেন। হঠাৎ স্যার বললেন – “শোনো শোনো, কী লিখেছে তোমাদের বন্ধু…..মানুষ তোমায় বেজায় খাটায় টানায় তোমায় লাঙ্গল গাড়ি,একটু যদি দোষ করেছ অমনি পড়ে লাঠির বাড়ি। আপন জিনিস বলতে তোমারনেই কিছু এই বিশ্বেতে,তোমার বাঁটের দুধটুকু তা-ওবাছুর তোমার পায়না খেতে। মানুষ তোমার মাংস খাবে,অস্থি দেবে জমির সারে,চামড়া দিয়ে পরবে জুতো বারণ কে তায় করতে পারে ? তোমার পরেই এই অত্যাচার হে মর্তের কল্পতরু। কারণ ? নহ সিংহ কি বাঘ,কারন তুমি নেহাৎ গরু। ” স্যার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন – “অনেক বড় হও বাবা”।বড় হয়েও ছিল সেই ছেলেটা। ডাক্তার হয়েছিল। বড়ো সাহিত্যিকও…… বাংলা ছোট গল্পের মাঁপাসা ডা: বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় ওরফে বনফুল। বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ “গরু” রচনাগুলোর মধ্যে আজো অবস্থান করছে এই রচনাটি।

Loading